রাষ্ট্রক্ষমতায় পালাবদলের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতি জটিলতার মুখে দাঁড় করিয়েছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রকে। ক্লাব দুটির প্রিমিয়ার লিগে খেলা অনিশ্চিত। আগামী মৌসুমের জন্য ক্লাব দুটির সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন অর্ধশতাধিক ফুটবলার। তারাও জটিলতার মুখে। সব মিলিয়ে ফুটবলে গভীর সংকটের ঘনঘটা!
প্রিমিয়ার লিগের সাবেক দুই চ্যাম্পিয়ন ক্লাবের দীর্ঘদিনের পৃষ্ঠপোষক ছিল বসুন্ধরা গ্রুপ। রাষ্ট্রক্ষমতার পালাবদলের পর প্রতিষ্ঠানটি পৃষ্ঠপোষকতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় পরিবর্তন আসার পর বিভিন্ন ক্লাব যাতে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারে, এজন্য দলবদলের সময়সীমা বৃদ্ধি করতে বিশ্ব ফুটবল সংস্থায় (ফিফা) আবেদন করেছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। কিন্তু ফিফা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, সময় বৃদ্ধি করা সম্ভব নয়।
দল গড়া নিয়ে দুটি ক্লাবে গভীর যে সংকট তৈরি হয়েছে তা মোকাবিলায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও নাকি কূলকিনারা করতে পারেননি শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের কর্মকর্তারা। প্রিমিয়ার লিগে অংশগ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না, জানিয়ে আজই বাফুফের কাছে চিঠি দেওয়া হবে বলে কালবেলাকে জানিয়েছেন শেখ রাসেলের ক্রীড়া পরিচালক সালেহ জামান সেলিম।
‘স্থানীয় ফুটবলারদের সঙ্গে যে চুক্তি করা হয়েছে, তাতে প্রায় ৯ কোটি টাকা প্রয়োজন। পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান সরে যাওয়ার পর হুট করে অত টাকা আহরণ করা সম্ভব নয়। আমরা অনেক চেষ্টা করেও কূলকিনারা করতে পারছি না। বাধ্য হয়ে বাফুফেকে নিজেদের অপারগতার বিষয়টি অফিসিয়ালি জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি’, কালবেলাকে বলছিলেন সালেহ জামান সেলিম।
শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের এক কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেছেন, ‘আমরাও ফুটবল দল গড়া নিয়ে গভীর সংকটের মধ্যে আছি। এরপরও হাল ছাড়লে তো চলবে না। অতীতে যারা ক্লাবকে সহায়তা করেছেন, এমন সংগঠকদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। প্রিমিয়ার লিগের জন্য দল গড়তে সর্বোচ্চ চেষ্টাই করছি আমরা।’
বাফুফের কম্পিটিশনস বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ফুটবলারদের সঙ্গে চুক্তি করলেও তাদের অফিসিয়ালি নিবন্ধন করানো হয়নি, যে কারণে দুই ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি করা ফুটবলাররা চাইলে ভিন্ন ক্লাবে নাম লেখাতে পারেন। এ প্রসঙ্গে বাফুফের কম্পিটিশন্স ম্যানেজার জাবের বিন তাহের আনসারী কালবেলাকে বলেছেন, ‘অনেক ক্লাব কর্তা জানতে চাচ্ছেন, শেখ জামাল ও শেখ রাসেলের সঙ্গে প্রাথমিক চুক্তি করা ফুটবলারদের দলভুক্ত করার ক্ষেত্রে কোনো আইনি জটিলতা আছে কি না? আমরা তাদের পরামর্শ দিচ্ছি, সংশ্লিষ্ট ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি করার আগে যাতে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে নেওয়া হয়।’
২০১২-১৩ মৌসুমের ট্রেবল জয়ী শেখ রাসেল এক মৌসুম বিরতি দিয়ে আবারও ঘরোয়া শীর্ষ লিগে ফিরতে চায়। স্থানীয় যে ফুটবলারদের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছিল, তারা ভিন্ন দলে নাম লেখাতে পারবেন; কিন্তু আগামী মৌসুমের জন্য সাত বিদেশি ফুটবলারের সঙ্গেও চুক্তি করেছিল ক্লাবটি। বিনা কারণে চুক্তি ভঙ্গ করলে সে ফুটবলাররা নিশ্চয়ই ক্ষতিপূরণ চেয়ে ফিফার কাছে নালিশ করবেন! তাতে বড় ধরনের জরিমানার মুখে পড়তে হবে শেখ রাসেলকে। সব মিলিয়ে প্রিমিয়ার লিগের প্রতিষ্ঠিত ক্লাবটির পরিস্থিতি বেশ জটিল আকার ধারণ করেছে।
মন্তব্য করুন