মায়ামির মাঠে চোখ রাঙাচ্ছিল আর্জেন্টিনার জায়ান্ট ক্লাব বোকা জুনিয়র্স। তবে মঙ্গলবার ক্লাব বিশ্বকাপে ঘটে গেল এক স্বপ্নের মুহূর্ত—নিউজিল্যান্ডের স্কুলশিক্ষক ক্রিশ্চিয়ান গ্রে গোল করে এনে দিলেন অপেশাদার ক্লাব অকল্যান্ড সিটির জন্য অবিশ্বাস্য এক ড্র!
মাত্র ২৮ বছর বয়সী গ্রে পেশায় একজন শারীরিক শিক্ষা শিক্ষক। আর সেই ‘অপেশাদার’ ফুটবলারের গোলেই ১-১ এ ম্যাচ শেষ করল তুলনামূলক দুর্বল অকল্যান্ড সিটি। যদিও তারা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বল দখল বা আক্রমণে পাত্তাই পায়নি—বোকা যেখানে নিয়েছে ৪১টি শট, সেখানে অকল্যান্ড মাত্র ৩টি। তবুও গোলপোস্টে পাওয়া একমাত্র সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছেন গ্রে।
এই একটি গোলই যেন স্বর্ণের চেয়ে দামি হয়ে উঠল অকল্যান্ডের জন্য। কারণ তার আগে দুটি ম্যাচে তারা হয়েছিল রীতিমতো বিধ্বস্ত—বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ১০-০ এবং বেনফিকার কাছে ৬-০ গোলে হেরে যায় দলটি।
অকল্যান্ডের এ দলটি পুরোপুরি অপেশাদার। খেলোয়াড়দের কেউ স্কুলশিক্ষক, কেউ ডেলিভারি চালক, কেউবা নির্মাণকর্মী। তারা নিজের খরচে এসেছে এই বিশ্ব আসরে খেলতে। দলটির কোচ পল পসা বলেন, ‘আমাদের ক্লাব খুব ছোট, কিন্তু হৃদয়টা বিশাল। এই এক পয়েন্ট আমাদের জন্য জয় সমান।’
গ্রে বলেন, ‘আমি এক ছোট শহর থেকে এসেছি, এখানকার পরিবেশের সঙ্গে আমার জীবনের মিল নেই। এই গোলটা স্বপ্নের মতো। কঠিন চারটা বছর ছিল আমাদের জন্য, স্বেচ্ছাসেবক নির্ভর ক্লাব হিসেবে আমরা অনেক কিছু ত্যাগ করেছি।’
এই ‘স্বপ্নের গোল’ করার পর গ্রে হয়তো আবার ফিরে যাবেন তার স্কুলের ক্লাসরুমে, যেখানে টেবিলের ওপর জমে আছে ছেলেমেয়েদের পরীক্ষা খাতা—অনেকটাই অচেনা এক জগৎ থেকে চেনা এক জগতে ফেরার মতো।
অকল্যান্ড সিটির বিশ্বকাপ শেষ হয়েছে গ্রুপের তলানিতে থেকে। কিন্তু সেই একমাত্র পয়েন্টে লেখা রইল ইতিহাস—যেখানে এক শিক্ষক, পেশাদারদের জালে বল জড়িয়ে বিশ্বকে মনে করিয়ে দিলেন ফুটবলের আসল সৌন্দর্যটা ঠিক কোথায়।
মন্তব্য করুন