লা লিগার মঞ্চে বার্সেলোনার বিস্ময়বালক লামিন ইয়ামালের উত্থান যেন গল্পের মতোই। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই বার্সা ও স্পেনের জার্সিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে মুগ্ধ করেছেন ফুটবলবিশ্বকে। তবে এই প্রতিভার ধারাবাহিকতা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জটাও যে সহজ নয়, সে বিষয়েই সতর্কবার্তা দিলেন রিয়াল মাদ্রিদের কিংবদন্তি টনি ক্রুস।
জার্মান এই মিডফিল্ডার সম্প্রতি লা গাজেত্তা দেল্লো স্পোর্ত-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ইয়ামালের পারফরম্যান্সের প্রশংসা করে বলেছেন, ‘আমি ১৭ বছর বয়সে বায়ার্নের মূল দলে জায়গা পেয়েছিলাম। কিন্তু ইয়ামালের যে মান, আমি সেই স্তরে ছিলাম না। তার মধ্যে যে প্রাকৃতিক প্রতিভা আছে, সেটা অসাধারণ। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তার ধারাবাহিকতা। কঠিন মুহূর্তেও সে দায়িত্ব নেয়, যা এই বয়সে একেবারেই স্বাভাবিক নয়।’
ক্রুস আরও যোগ করেছেন, ‘একজন খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ার হলো একটি ম্যারাথন দৌড়ের মতো, স্প্রিন্ট নয়। আগামী ৫-১০ বছরে দেখা যাবে, সে কতটা পরিণত হয় এবং মাঠের বাইরের চ্যালেঞ্জগুলো সে কতটা সামলাতে পারে। সাফল্য কেবল মাঠের পারফরম্যান্সের ওপর নির্ভর করে না, মাঠের বাইরের বিষয়গুলোও সমান গুরুত্বপূর্ণ। জীবনের নানা দিক সামলানোর ক্ষমতা থাকতে হবে।’
টনি ক্রুসের এমন বক্তব্য যেন ইয়ামালের জন্য এক ধরনের সতর্ক সংকেত। কারণ, ইতোমধ্যেই ক্লাব ও দেশের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তার উপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে। ইউরো ২০২৪-এও স্পেনের হয়ে চমৎকার খেলেছেন ইয়ামাল, যেখানে কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানিকে বিদায় জানিয়েছিল স্পেন।
তবে ক্রুসের মতো একজন অভিজ্ঞ তারকা যখন তরুণ খেলোয়াড়কে মাঠের বাইরের চ্যালেঞ্জের ব্যাপারে সতর্ক করেন, তখন বিষয়টি অনেক বেশি গুরুত্বের দাবি রাখে। কারণ, তরুণ বয়সে তারকারা প্রায়ই খ্যাতি ও বাইরের চাপের কারণে পথ হারিয়ে ফেলেন।
আগামী মৌসুমে ইয়ামালকে বার্সেলোনার আক্রমণভাগের নেতৃত্ব দিতে দেখা যাবে রবার্ট লেভানডভস্কি ও রাফিনিয়ার সঙ্গে। পাশাপাশি ২০২৬ বিশ্বকাপও দোরগোড়ায়। ফলে চাপ ও প্রত্যাশার মাত্রা আরও বাড়বে এই স্প্যানিশ বিস্ময়বালকের ওপর।
সুতরাং মাঠের পারফরম্যান্সের পাশাপাশি মাঠের বাইরের জীবনও সঠিকভাবে সামলানোই ইয়ামালের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে—যা টনি ক্রুসের অভিজ্ঞ বার্তাই নতুন করে মনে করিয়ে দিল।
মন্তব্য করুন