ইউরোপিয়ান ফুটবলে নতুন মৌসুম শুরুর আগেই গুঞ্জন ছিল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তাদের নতুন নম্বর ওয়ান গোলকিপার হিসেবে বিশ্বকাপজয়ী এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে দলে ভেড়াবে। মধ্যখানে গুঞ্জন থামলেও দলবদলের শেষ দিকে আবারও একই কাহিনী। যখন মনে হচ্ছিল রেড ডেভিল ডেরায় নাম লেখাবেন এমি তখনই ঘুরে গেল কাহিনির মোড়।
শেষ পর্যন্ত অ্যাস্টন ভিলার আর্জেন্টাইন তারকার বদলে তারা হাত বাড়ালেন তুলনামূলক অচেনা এক মুখের দিকে—বেলজিয়ান দল রয়্যাল অ্যান্টওয়ার্পের গোলকিপার সেন্নে ল্যামেন্স। চুক্তির মূল্য ধরা হয়েছে ১৮ মিলিয়ন পাউন্ড, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২৫৫ কোটি টাকা।
মার্টিনেজকে নয়, কেন ল্যামেন্স?
দুই মৌসুম ধরে আন্দ্রে ওনানা বারবার সমালোচনার মুখে পড়েছেন। ব্যাক-আপ গোলকিপার আলতাই বায়িন্দারও ভরসা জাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই নতুন গোলরক্ষকের খোঁজে নেমেছিল ইউনাইটেড। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন মার্টিনেজ, যিনি ভিলা থেকে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে আসার ব্যাপারে নাকি রাজিও ছিলেন। এমনকি শোনা যাচ্ছিল, জাডন সাঞ্চোকে ভিলায় ধারে পাঠিয়ে পথ খুলে দেওয়া হবে আর্জেন্টাইন গোলকিপারের জন্য।
কিন্তু সেই নাটকীয় জল্পনা শেষ পর্যন্ত ভেস্তে যায়। মার্টিনেজ নয়, ইউনাইটেড বেছে নিলেন ২৩ বছর বয়সী ল্যামেন্সকে, যিনি এখনও বেলজিয়ামের হয়ে সিনিয়র অভিষেকও পাননি।
ঝুঁকি নাকি দূরদর্শিতা?
ল্যামেন্সকে সই করানোর খবর যতটা অবাক করেছে, তার চেয়ে বড় প্রশ্ন জাগছে ইউনাইটেড সমর্থকদের মনে—বিশ্বকাপজয়ী অভিজ্ঞতার বদলে কেন এমন এক গোলকিপার, যাকে ইউরোপীয় মহলে খুব বেশি চেনেনই না অনেকে?
তবে বোর্ডের যুক্তি পরিষ্কার— বেবি কোর্তোয়া ডাক নাম পাওয়া তরুণ, দীর্ঘমেয়াদি প্রজেক্ট, আর তুলনামূলক কম খরচে একটি নির্ভরযোগ্য গোলকিপার গড়ে তোলাই রেড ডেভিলদের লক্ষ্য। ল্যামেন্স পাঁচ বছরের চুক্তিতে সই করতে যাচ্ছেন এবং মেডিকেলের জন্য ইতিমধ্যেই ইংল্যান্ডে আসছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী তারকা মার্টিনেজ ভেবেছিলেন ওল্ড ট্র্যাফোর্ডই হতে পারে তার পরবর্তী গন্তব্য। কিন্তু ম্যানইউর অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্তে তাকে এখন নতুন করে ভবিষ্যৎ ভাবতে হচ্ছে। অ্যাস্টন ভিলায় থেকে যাবেন, নাকি অন্য কোনো প্রস্তাবে সাড়া দেবেন—তা এখনো অনিশ্চিত।
আন্তর্জাতিক বিরতির পর মৌসুম আবারৃ শুরু হতেই বোঝা যাবে, ল্যামেন্সের ওপর আস্থা রাখা সিদ্ধান্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, নাকি দূরদর্শী এক বিনিয়োগ।
মন্তব্য করুন