

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের একাদশতম রাউন্ডে টটেনহ্যাম হটস্পার স্টেডিয়ামে যেন এক সিনেমার শেষ দৃশ্যর মঞ্চায়ন হল। টটেনহ্যাম ও ম্যানইউর মধ্যকার ম্যাচের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দর্শকরা জানতেন না, কে হাসবে শেষ হাসি। ৯৬তম মিনিটে মাথায় হাত দিয়ে বসা টটেনহ্যাম সমর্থকদের চোখের সামনে নাটকীয় সমাপ্তি ঘটালেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ডাচ তারকা মাতাইস দে লিগট। তার যোগ করা সময়ে করা হেডে ২-২ গোলে ড্র করে নাটকীয়ভাবে পয়েন্ট বাঁচাল রেড ডেভিলরা।
প্রথমার্ধে নিয়ন্ত্রণ ছিল ইউনাইটেডের হাতে। ৩২তম মিনিটে ব্রায়ান এমবেউমোর হেডে এগিয়ে যায় অতিথিরা। আমাদ দিয়ালো ডান দিক থেকে নিখুঁত ক্রস তুলেছিলেন, সেটাই গোল বানিয়ে দেন এমবেউমো। টটেনহ্যাম প্রথমার্ধে তেমন সুযোগই পায়নি, তাদের প্রতিটি আক্রমণই আটকে যায় ইউনাইটেড রক্ষণে।
দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা জেগে ওঠে হোম দল। রোমেরো ও ভ্যান দে ভেনের দারুণ দুটি প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দেন ইউনাইটেড গোলরক্ষক সেন্নে ল্যামেন্স। তবে ম্যাচের মোড় ঘুরে যায় ৮৪তম মিনিটে—বদলি নামা ম্যাথিস টেল দারুণ দক্ষতায় দে লিগটকে কাটিয়ে জোরালো শটে গোল করে ম্যাচে ফেরান দলকে (১-১)।
এরপরই শুরু হয় আসল নাটক। ৯১তম মিনিটে রিচার্লিসন ডব্লিউলসন ওডোবার্তের দূরপাল্লার শটে টোকা দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন। মনে হচ্ছিল, সমালোচনার জবাবটা মাঠেই দিলেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। স্টেডিয়ামজুড়ে তখন উল্লাসের ঢেউ—স্পার্সরা জয় উদযাপন শুরু করে দিয়েছে।
কিন্তু ভাগ্য যেন অন্য কিছু লিখে রেখেছিল। ইনজুরি টাইমের শেষ মিনিটে (৯০+৬) কর্নার থেকে ল্যামেন্স পর্যন্ত উঠে এসেছিলেন ইউনাইটেডের আক্রমণে। সেই বলেই দে লিগট মাথা ছুঁইয়ে দেন বলটিকে, যা গ্লাভস ছুঁয়ে জালে জড়ায়—গোল! মুহূর্তেই নেমে আসে নীরবতা, টটেনহ্যামের জয়ের স্বপ্ন ভেঙে যায় শেষ বাঁশির আগেই।
শেষে দুই দলই যেন বিশ্বাস করতে পারছিল না ফলাফলটা। রিচার্লিসন প্রায় কাঁদতে বসেছিলেন, আর ইউনাইটেড কোচ রুবেন আমোরিমও অবাক—যে ম্যাচটা তাঁর দল প্রায় হারিয়েই ফেলেছিল, শেষ পর্যন্ত সেখান থেকেই এক পয়েন্ট তুলে নেওয়ার স্বস্তি।
৬১ হাজার দর্শকের সামনে এমন রোমাঞ্চকর ম্যাচে জিততে না পারলেও, ফুটবলের আবেগটা যে শেষ মুহূর্তেও কতটা অনিশ্চিত—তাই আবারও মনে করিয়ে দিল টটেনহ্যাম বনাম ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এই লড়াই।
মন্তব্য করুন