

ফুটবল যেদিন অনুভূতির নাম হয়ে ওঠে, সেদিন ফলাফলের চেয়েও বড় হয়ে দাড়ায় প্রতিপক্ষের মুখের স্বীকারোক্তি। ২২ বছর পর বাংলাদেশের কাছে হার—ভারতীয় ফুটবলের জন্য এ যেন এক বাস্তবতার ধাক্কাই। টিম ইন্ডিয়ার কোচ খালিদ জামিল সেটিই মেনে নিলেন পরিষ্কার ভাষায়। বললেন, “হেরেছি—খুবই খারাপ লাগছে। খুবই।”
মঙ্গলবার ঢাকার আকাশের নিচে বাংলাদেশের ১-০ গোলের জয়ে নবউদ্যমে ফুটবলজাগরণ দেখেছে দেশ। আর সেই ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে হতাশা লুকাতে পারেননি ভারতীয় কোচ। তার কথায় শোনা গেল পুরো দলের ব্যর্থতার স্বীকারোক্তি—“দুর্ভাগ্য বললে ভুল হবে। ফুটবল এমনই। কঠোর পরিশ্রম করলে ৩ পয়েন্ট আসে। আজ আমাদের পরিশ্রম যথেষ্ট ছিল না।”
ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে আলো ছড়িয়েছেন ইংল্যান্ড প্রবাসী ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী। প্রথমার্ধে লালিয়ানজুয়ালা চাংতের শট গোললাইন থেকে ঠেকানোয় ভারত ফিরে আসার সুযোগ পায়নি। তবে খালিদ শুধু হামজার নয়, বাংলাদেশ দলের সমষ্টিগত খেলাকেই বেশি গুরুত্ব দিলেন। বললেন, “বাংলাদেশের সব খেলোয়াড়ই ভালো খেলেছে। তারা সুযোগ পেয়েছে কাউন্টার-অ্যাটাক থেকে—এটাই পার্থক্য গড়েছে।”
ম্যাচে উত্তেজনার ছোঁয়া ছিল যথেষ্ট। প্রথমার্ধের শেষ দিকে তপু বর্মনকে ফাউলকে কেন্দ্র করে দুই দলের খেলোয়াড়েরা ধাক্কাধাক্কিতে জড়ান। তপু ও নারাভি নিখিল প্রভুকে হলুদ কার্ড দেখাতে হয় রেফারিকে। তবু খালিদ জামিল ঘটনাটিকে বড় করে দেখেন না। “এটা স্বাভাবিক,” তিনি বলেন, “ফুটবলে কখনো শারীরিক লড়াই আসে, কখনো বাকবিতণ্ডা। খেলারই অংশ।”
২২ বছরের অপেক্ষার পর বাংলাদেশ—ভারত লড়াইয়ে নতুন অধ্যায় লিখেছে লাল-সবুজরা। ভারতীয় কোচের স্বীকারোক্তি সেই অধ্যায়ের মূল্যই আরও স্পষ্ট করে তুলল: জিতেছে বাংলাদেশের পরিকল্পনা, পরিশ্রম আর মানসিক দৃঢ়তা—আর হার মেনেছে ভারতীয় ফুটবলের আত্মবিশ্বাস।
মন্তব্য করুন