

দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক নিরপেক্ষতার নীতি তুলে ধরে আসছে ফিফা। খেলোয়াড়দের রাজনৈতিক বার্তা প্রদর্শনের অভিযোগে জরিমানা ও নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার নজিরও রয়েছে অসংখ্য। অথচ শুক্রবার সংস্থাটির সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে তুলে দিলেন ফিফার প্রথম ‘শান্তি পুরস্কার’—আর তাতেই প্রশ্ন উঠেছে ফিফার নীতিগত অবস্থান নিয়ে।
সমালোচকদের অভিযোগ, পুরস্কার ঘোষণার মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে ক্যারিবীয় অঞ্চলে আরেকটি প্রাণঘাতী বিমান হামলা চালিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ফলে পুরস্কার পাওয়া ট্রাম্পের প্রতি ইনফান্তিনোর প্রকাশ্য সমর্থন ফিফার নিরপেক্ষতা নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে।
জাতিসংঘের সাবেক কর্মকর্তা ও গাজায় ‘গণহত্যার’ অভিযোগে ইসরায়েলকে ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করার দাবিকারী ক্রেইগ মোকহিবার এই পুরস্কারকে বলেছেন ‘লজ্জাজনক’। তিনি আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে অভিযোগ করেন, গত দুই বছরে গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে ফিফার নীরবতার পর এবার ট্রাম্পকে খুশি করতে নতুন পুরস্কার উদ্ভাবন করা হয়েছে।
ইনফান্তিনো আগে থেকেই যুক্তি দিয়ে আসছেন যে ফুটবল ‘ভূরাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের জায়গা নয়’। তবে সমালোচকদের মতে, এ বক্তব্য ফিফার নিষ্ক্রিয়তা আড়াল করতেই ব্যবহৃত হচ্ছে।
মোকহিবার আরও বলেন, ট্রাম্পকে এ পুরস্কার দেওয়া আসলে কলঙ্কিত রেকর্ড। ইসরায়েলকে সমর্থন, ক্যারিবীয় সাগরে প্রাণঘাতী হামলা, আর যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ঢাকার প্রচেষ্টা এটি।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানায়, ট্রাম্প প্রশাসনের মানবাধিকার রেকর্ড শান্তি ও ঐক্যের জন্য ব্যতিক্রমী কর্মকাণ্ড দিয়ে ঢাকা যাবে না।
মোকহিবারের দাবি, এই অরুচিকর পুরস্কার ফিফার অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত। তার ভাষায়, ফিফা কাদামাখা মাঠে খেলা নিষিদ্ধ করে। রক্তমাখা মাঠে নিশ্চয়ই খেলা উচিত নয়। অথচ ইনফান্তিনো ফিফাকে ঠিক সেই দিকেই নিয়ে যাচ্ছেন।
মন্তব্য করুন