রিয়ালের হোম গ্রাউন্ড সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে শনিবার (২৫ মে) নিজের শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছেন রিয়ালের কিংবদন্তি জার্মান মিডফিল্ডার টনি ক্রুস। তার বিদায় বেলায় পুরো বার্নাব্যু আবেগে পরিপূর্ণ ছিল। যেখানে ‘রেফারি, শেষ বাঁশি বাজাবেন না, না হলে ক্রুস আমাদের ছেড়ে চলে যাবে’- এমন প্লা-কার্ড নিয়ে মাঠে এসেছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের এক খুদে ভক্ত।
ক্যামেরাবন্দি এ ছবি সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে বাড়িয়েছিল আবেগের মাত্রা। সব মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়ে বিদায় বলতে হয়েছে এক টনি ক্রুসকে। যে ক্রুস শুধু রিয়ালের, বার্নাব্যুতে উপস্থিত হওয়া আশি হাজার সমর্থকদের। হয়তো সংখ্যাটা আশি নয় তার থেকেও ঢের।
ছবিটা আসল কি না নকল সেটা জানা নেই। তবে মিথ্যে হলে কারই বা যায় আসে। এই মিথ্যে কথাটাই যে সত্যি। সময়কে বেঁধে রাখা যায় না। তাও সেই ব্যর্থ চেষ্টাটা করবেন কিংবা করেছেন অনেকেই। তবে রেফারি যে সময়ের কাটায় বাঁধা এক দায়িত্ববান। যার কাছে আবেগ বলে কিছু থাকে না। তাইতো সময় শেষ হলে শেষ বাঁশিটা দিতে সে বদ্ধ পরিকর।
জার্মান টনি ক্রুস নিজের দেশ ছেড়ে এসিছিলেন ফুটবলের ঘাঁটি স্পেনে। সেখানকারই বিখ্যাত ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে কাটিয়েছেন দীর্ঘ ১০টা বছর। যে বছরগুলোতে ভক্তদের কাছে যাওয়ার বন্ধনটাই তৈরি হয়েছিল। সেই বন্ধনের জোরে বিদায়টা যে কষ্টসাধ্য। তাও ওই, কোনো জায়গাতেই কেউ চিরস্থায়ী নন। বিদায়টা যে সময় শেষে চলে আসবেই।
শোনা যায় রিয়াল মাদ্রিদের ফুটবলারদের না কি স্প্যানিশ ভাষা জানাটা অপরিহার্য। তা না হলে ভক্ত কিংবা ক্লাবের কর্তৃপক্ষের মেলবন্ধনটা ঠিক তেমনভাবে জমে না। তবে ১০ বছরেও স্প্যানিশটা তেমন রপ্ত করতে পারেননি ক্রুস। তবে এক্ষেত্রে সম্পর্ক তৈরি হতে তেমন বাধা ছিল না। ফুটবলের ভাষা দিয়েই পরের দেশে ঘরের ছেলে হয়ে ওঠা ক্রুসকে আপন ভেবে ভালোবাসা নিংড়ে দিয়েছে ক্লাবটার সবাই। এমন ভালোবাসা কেই বা অর্জন করতে পারেন।
অবশেষে বিদায় যে চলে আসে। যেটা এসেছে ক্রুসের জন্য। বিদায়বেলা পুরো স্টেডিয়াম দাঁড়িয়ে যায় ক্রুসকে সম্মান জানাতে। ভিআইপি স্ট্যান্ড থেকে যেটা করেছেন রিয়ালের সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজও। কড়তালিতে মুখোরিত হয় পুরো বার্নাব্যু স্টেডিয়াম।
আবেগহীন ক্রুসকেও থমকে যেতে দেখা যায় ক্ষণিকের জন্য। চোখ বুজে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশই যেন প্রকাশ করতে দেখা যায় ক্রুসকে। সাদাদের শিবিরে এই মাঠে আর কখনোই যে খেলা হবে না একজন টনি ক্রুসের।
মন্তব্য করুন