কাতার বিশ্বকাপ জয়ের পর যতগুলো সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, প্রায় সবগুলোতেই দুই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে লিওনেল মেসিকে...
প্রতিবারই খুবই ঠান্ডা মাথায় এবং বাস্তবসমম্ত উত্তর দিয়েছেন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক। আসছে কোপা আমেরিকা কাপ। এ জন্য শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত অংশগ্রহণকারী ১৬ দলের ফুটবলাররা। মেসির ডেরায় ইন্টার মায়ামিতে অনুশীলন করছে আর্জেন্টিনা। কোপার আগে নিয়মিতভাবে গণমাধ্যমে মুখোমুখি হচ্ছেন তিনি।
সম্প্রতি ইএসপিএন আর্জেন্টিনাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাতীয় দলে নিজের ভবিষ্যৎ, ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনাসহ আরও অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। সেখানে তিনি জানান, ২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে তার বড় ছেলে থিয়াগো কী চাইছে?
️ Messi: "Thiago talks to me a lot about the upcoming World Cup. We live in the United States and it will be held there." pic.twitter.com/QrqStEFIBh — Barça Worldwide (@BarcaWorldwide) June 12, 2024
২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে মেসি
মেসি বলেন, ‘আসন্ন বিশ্বকাপ নিয়ে থিয়াগো আমার সঙ্গে অনেক কথা বলে। সে বললে আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকি। আর এখানে এটি (বিশ্বকাপ) অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। সে আমাকে প্রশ্ন করে, আমরা কেন এটা নিয়ে কথা বলি না। সে বিশ্বকাপ উপভোগ করতে চায়, আবারও রোমাঞ্চিত হতে চায়।’
ছেলের চাওয়া কি পূরণ করবেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি? পরে সঙ্গে সঙ্গে মনে করিয়ে দেন. ‘যতক্ষণ আমি শারীরিকভাবে সুস্থ থাকব এবং বুঝব পারব আমি আমার সেরা পারফরম্যান্স দিতে সক্ষম। জাতীয় দলকে সাহায্য করতে পারব, ততক্ষণ আমি খেলা চালিয়ে যাব।’
রেকর্ডের হাতছানি
মেক্সিকোর আন্তোনিও কারবাজাল, জার্মানির লোথার ম্যাথাউস, ইতালির জিয়ানলুইজি বুফন, পর্তুগালের ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর সঙ্গে সবচেয়ে বেশি পাঁচ বিশ্বকাপ খেলার রেকর্ড মেসির। ২০২৬ বিশ্বকাপে খেললে বিশ্বের একমাত্র ফুটবলার হিসেবে ৬টি বিশ্বকাপ খেলার রেকর্ড গড়বেন তিনি।
তবে এই রেকর্ডটির কোনো গুরুত্ব নেই তার কাছে, ‘আমি কখনও রেকর্ডকে গুরুত্ব দেইনি। আমি ছয়টি বিশ্বকাপ খেলেছি, শুধু এই কথাটি বলার জন্য বিশ্বকাপে খেলবো না।’
কাতার বিশ্বকাপ জয়
ক্লাব পর্যায়ের সবগুলো ট্রফি জিতলেও মেসির কাছে ধরা দিচ্ছিল না কোনো আন্তর্জাতিক শিরোপা। অবশেষে কোপা আমেরিকা, ফাইনালেসিমা পরে বিশ্বকাপ... সম্ভাব্য আন্তর্জাতিক সবগুলো ট্রফি জেতেন মেসি।
ইএসপিএন আর্জেন্টিনাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কাতার বিশ্বকাপ জয় কিভাবে তার জীবনকে বদলে দিয়েছে সেই কথাও জানান তিনি, ‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া খুব কঠিন এবং সবাই এই ট্রফি জিততে পারে না। বিশ্বকাপ আমার কাছে সঠিক সময়ে এসেছে।’
মেসি আরও বলেন, ‘এটি (বিশ্বকাপ শিরোপা) আমার জীবন বদলে দিয়েছে। এটাই ছিল একমাত্র জিনিস যা আমি মিস করছিলাম। এটি আর্জেন্টিনার সব খেলোয়াড়েরই স্বপ্ন। বিশ্বকাপ জয় আমার ক্যারিয়ারকে চূড়ান্ত এবং সম্পূর্ণ করেছে।’
২০১৪ সালে খুব কাছে গিয়েও জেতা হয়নি বিশ্বকাপ। কাতারেও যদি হেরে যেতেন তাহলে কেমন হতো, এমন প্রশ্নে মেসি বলেন, ‘বিশ্বকাপ না জিতলে আমি অনেক কষ্ট পেতাম। ২০১৪ সালের ফাইনাল নিয়ে আমি অনেক ভেবেছি। আমরা খুব কাছাকাছি ছিলাম, কিন্তু ছুঁতে পারছিলাম না। সেই না পাওয়ার চিন্তায় আমি অনেক বছর ধরে প্রভাবিত হয়েছি। দুটি বিশ্বকাপ ফাইনালে হারলে, আমার দলের জন্য একটা বড় কলঙ্ক হয়ে যেত।’
কাতার বিশ্বকাপের ফাইনাল জয়ের পরপর নিজের অনুভূতিও জানান মেসি, ‘শেষ হুইসেল? সেই মুহূর্তে, আমি কাঁদতে পারছিলাম না। কিন্তু পরে, যখন সবকিছু শান্ত হয়ে যায়, আমিও শান্ত ছিলাম, তখন আমি একা আনন্দে কান্নায় ভেঙে পড়ি।’
এদিকে আর্জেন্টাইন সাংবাদিক লিও প্যারাডিজো জানিয়েছেন, মুখে যতই না বলুক ২০২৬ বিশ্বকাপ খেলতে ঠিক প্রস্তুত হচ্ছেন মেসি। চোটগ্রস্ত পেশিগুলো পুনরুজ্জীবিত করতে নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।
এই কথার সত্যতা পাওয়া যায় আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির আরও একটি মন্তব্যে। তিনি বলেছেন, ‘আমি ফুটবল ছাড়তে প্রস্তুত নই। কারণ আমি বল নিয়ে খেলতে অনেক পছন্দ করি।’
মন্তব্য করুন