দেশের বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ সমস্যার জেরে চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে মাত্র দুদিনের বিদেশ সফরে গেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
গত মার্চে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে দুদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে রাশিয়ায় যান শি। চীনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পর এবারই সবচেয়ে কম সময় বিদেশ সফরে কাটিয়েছেন তিনি।
মার্কিন সংবাদমাদ্যম ব্লুমবার্গের বরাতে আজ শুক্রবার (৪ আগস্ট) এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
তবে করোনা মহামারির আগে এমন ছিলেন না শি। বেশ বেশ ঘন ঘন বিদেশ সফর করেছেন তিনি। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের চেয়েও বেশি।
ব্লুমবার্গ বলছে, ২০১৩ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে প্রতি বছর ১৪টি দেশ সফর করেন শি। আর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতি বছর ১২টি দেশ সফর করেছেন।
আরও পড়ুন : পুতিনের বন্ধু হওয়ায় শি’কে সতর্কতা বাইডেনের
বর্তমানে বিভিন্ন দেশের সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানরা শির সঙ্গে দেখা করতে বেইজিং সফর করছেন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ফ্রান্স, ইরিত্রিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ ৩৬টি দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করেছেন শি। যদিও করোনার আগে একই সময়ে শি গড়ে বিভিন্ন দেশের ৪৮ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করেছেন। এর মানে হলো বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে শির সরাসরি যোগাযোগ কমছে।
সরাসরি এই যোগাযোগ হ্রাসের ক্ষতি শি ভার্চুয়ালি পুষিয়ে নিচ্ছেন বিষয়টিও এমনও নয়। এ বছর শুধু একজন বিদেশি সরকারপ্রধানের সঙ্গে তিনি ভিডিও কলে কথা বলেছিন। সেটিও চেক প্রজাতন্ত্রের নেতার সঙ্গে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্বনেতাদের সঙ্গে শির সরাসরি যোগাযোগ কমে যাওয়ায় বিশ্ব রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের যে প্রতিযোগিতা সেখানে বেইজিং পিছিয়ে পড়তে পারে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক আটলান্টিক কাউন্সিলের গ্লোবাল চায়না হাবের অনাবাসিক ফেলো ওয়েন-টি সুং বলেন, বর্তমানে শির কাছে কূটনীতির চেয়ে দেশের ভেতরে অগ্রাধিকার রয়েছে। চীনের অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে, প্রতিশ্রুতিশীল পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাংকে অপসারণ করা হয়েছে এবং দুর্নীতির তদন্তের গুঞ্জনের মধ্যে দেশের পরমাণু বাহিনীর শীর্ষ নেতাদের পদচ্যুত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সহজ করে বললে চীনের দেশের ভেতরে অগ্রাধিকার রয়েছে। দেশের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে শির হস্তক্ষেপ আরও প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে সুযোগ ব্যয় বাড়ায়, বিদেশ সফর নিয়ে শি আরও বেশি সিলেকটিভ হয়ে গেছেন। এ জন্য তিনি বিদেশ সফরে কম যাচ্ছেন।
মন্তব্য করুন