উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন দেশটির নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজগুলোতে দ্রুত পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন। একটি নতুন যুদ্ধজাহাজের অস্ত্র ব্যবস্থার পরীক্ষা পর্যবেক্ষণের সময় কিম এ নির্দেশ দেন। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন কন্যা কিম জু আয়ে, যাকে অনেকেই কিমের ভবিষ্যৎ উত্তরসূরি হিসেবে দেখছেন।
দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ বুধবার জানায়, পিয়ংইয়ং সম্প্রতি ‘চোয়ে হিয়ন’ নামের ৫,০০০ টনের একটি ডেস্ট্রয়ার শ্রেণির যুদ্ধজাহাজ উন্মোচন করে। সেটিকে ঘিরে দুই দিনের এই অস্ত্র পরীক্ষার প্রথম দিনে স্বয়ং কিম উপস্থিত ছিলেন।
খবরে বলা হয়, কিম এসময় তার নৌবাহিনীকে পারমাণবিকায়নে গতি আনার নির্দেশ দেন। এর আগে উত্তর কোরিয়া দাবি করেছিল, এই জাহাজে ‘সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র’ সংযুক্ত রয়েছে এবং আগামী বছরের শুরুতেই এটি অভিযানে যেতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, জাহাজটিতে স্বল্পপাল্লার কৌশলগত পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র সংযুক্ত করা হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এর আকার ও কাঠামোর ভিত্তিতে এটি শিপ-টু-সারফেস ও শিপ-টু-এয়ার মিসাইল ছুড়তে সক্ষম—যার অর্থ এটি একইসঙ্গে আকাশ ও স্থল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
কেসিএনএ জানিয়েছে, মঙ্গলবার পরীক্ষায় শিপ-টু-শিপ কৌশলগত নির্দেশিত অস্ত্র, বিভিন্ন ধরনের স্বয়ংক্রিয় কামান এবং ইলেকট্রনিক জ্যামিং অস্ত্র পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল, কৌশলগত ক্রুজ মিসাইল, অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট মিসাইল ও ১২৭ মিমি স্বয়ংক্রিয় কামানও পরীক্ষা করা হয়।
কিম এর আগে পরমাণু চালিত সাবমেরিন নির্মাণ প্রকল্প পরিদর্শন করেন এবং নৌ ও স্থলবাহিনী উভয়ের আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, তাদের নৌযানগুলোতে সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল, কৌশলগত ক্রুজ মিসাইল এবং ট্যাকটিকাল ব্যালিস্টিক মিসাইলের সমন্বয়ে আক্রমণ ক্ষমতা আরও শক্তিশালী হয়েছে।
নিজেদের ‘অপরিবর্তনীয় পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র’ হিসেবে দাবি করে উত্তর কোরিয়া জানিয়েছে, তাদের নিরস্ত্রীকরণ কোনোভাবেই সম্ভব নয় এবং ওয়াশিংটন-সিউলের যৌথ মহড়াকে তারা ‘আক্রমণের প্রস্তুতি’ হিসেবে বিবেচনা করছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় উত্তর কোরিয়ার নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ ও অস্ত্র উন্নয়ন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
উল্লেখ্য, পিয়ংইয়ংকে লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়া একাধিকবার যৌথ সামরিক মহড়া চালিয়েছে এবং উত্তর কোরিয়াকে প্রতিহত করতে যুদ্ধবিমান, রণতরী ও পরমাণু চালিত সাবমেরিন মোতায়েন করেছে।
মন্তব্য করুন