সাগরে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি নেভির একটি টাইপ ০৫২ডি ডেস্ট্রয়ারের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে দেশটির কোস্টগার্ডের একটি জাহাজের। এ ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ চীন সাগরের স্কারবোরো শোলে। জানা গেছে, ফিলিপাইন কোস্টগার্ডের একটি টহল নৌকাকে তাড়া করার সময় নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের যুদ্ধজাহাজ দুটির মধ্যে এ সংঘর্ষ ঘটে।
সংবাদমাধ্যম নিউজউইক জানিয়েছে, সংঘর্ষের ঘটনায় চীনা কোস্টগার্ডের জাহাজের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়। ফিলিপাইন সরকার প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে ধাক্কার মুহূর্ত স্পষ্ট ধরা পড়েছে।
ঘটনার ভিডিও ফুটেজ অনুযায়ী, ফিলিপাইনের কোস্টগার্ডের অপারেটর রেডিওর মাধ্যমে সহায়তার প্রস্তাব দেন। বিশেষ করে চীনা কোস্টগার্ডের জাহাজে থাকা ব্যক্তিদের চিকিৎসা নিয়ে কথা বলতে শোনা যায় ফিলিপাইনের কোস্টগার্ডের অপারেটরকে।
স্কারবোরো শোল একটি সমৃদ্ধ মাছ ধরার এলাকা। ফিলিপাইন এই এলাকার মালিকানা দাবি করে, যা নিয়ে বহুদিন ধরেই চীনের সঙ্গে দেশটির বিরোধ চলছে। ২০১৬ সালে হেগের আন্তর্জাতিক সালিশি আদালত চীনের প্রায় পুরো দক্ষিণ চীন সাগরের মালিকানার দাবি খারিজ করলেও বেইজিং তা মানতে অস্বীকৃতি জানায়।
ফিলিপাইন কোস্টগার্ড ও মৎস্য বিভাগের একটি যৌথ মিশন স্থানীয় জেলেদের জন্য সরঞ্জাম ও খাদ্য পৌঁছে দিতে গেলে চীনের কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী তা আটকানোর চেষ্টা করে। স্কারবোরো শোল থেকে প্রায় ১০.৫ নটিক্যাল মাইল দূরে চীনা কোস্টগার্ডের CCG 3104 এবং গাইডেড-মিসাইল ডেস্ট্রয়ার Guilin ফিলিপাইনের ছোট টহলজাহাজ BRP Suluan-কে ঘিরে ফেলার চেষ্টা করে।
ভিডিওতে দেখা যায়, CCG 3104 দ্রুত গতিতে BRP Suluan-এর পিছু ধাওয়া করে পানির কামান ছোড়ে। এরপর হঠাৎ ডান দিকে ঘুরে এসে সরাসরি Guilin-এর সাথে ধাক্কা খায়। এতে কোস্টগার্ড জাহাজটির সামনের অংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সেটি অচল হয়ে পড়ে।
ফিলিপাইন কোস্টগার্ডের মুখপাত্র জে তারিয়েলা জানান, সংঘর্ষের পরপরই ফিলিপাইন পক্ষ চীনা নাবিকদের উদ্ধার ও চিকিৎসা সহায়তার প্রস্তাব দেয়। একই মিশনে থাকা কাছাকাছি অপেক্ষমাণ আরেকটি জাহাজে করে জেলেদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। অন্যদিকে, চীনা কোস্টগার্ড এক বিবৃতিতে অভিযোগ করে বলেছে, ফিলিপাইনের জাহাজগুলো ‘মাছ ধরার নৌকায় সরবরাহ দেওয়ার অজুহাতে’ তাদের সমুদ্রসীমায় প্রবেশ করেছে। তারা দাবি করে, আইন অনুযায়ী তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তবে সংঘর্ষের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের সিনিয়র গবেষক ও সাবেক নৌ-অফিসার ব্রেন্ট স্যাডলার বলেছেন, এ ঘটনা বিরোধকে আরও উসকে দিতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, চীনা নৌবাহিনীর এ ধরনের সরাসরি সম্পৃক্ততা বিরোধে নতুন মাত্রা যোগ করছে।
মন্তব্য করুন