প্রথমবারের মতো পারমাণবিক হামলায় সক্ষম এমন সাবমেরিন নামিয়েছে উত্তর কোরিয়া। এ সাবমেরিনটি জাপান ও কোরিয়া উপদ্বীপেরর মাঝখানে নিয়মিত টহল দেবে। শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন এ সাবমেরিনের উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি বলেন, নৌবাহিনীর জন্য পরামাণু অস্ত্রের এমন পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি ছিল। তিনি কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত এবং পানির নিচে ও ভূপৃষ্ঠে নৌবাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে আরও সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন।
কোরিয়া সরকারি এক শীর্ষ কর্মকর্তার বরাতে কেসিএনএ জানিয়েছে, পারমাণবিক হামলায় সক্ষম এ সাবমেরিন নামানোর মাধ্যমে নৌবাহিনীকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো।
কিম বলেন, এটিকে উত্তর কোরিয়ার ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব হিরো কিম কুন নামে নামকরণ করা হয়েছে। এটির মাধ্যমে নৌবাহিনীর পানির গভীরে থেকে আক্রমণাত্মক ও যুদ্ধ পরিচালনা করতে পারবে। বর্তমানে দেশটি তাদের বহরে থাকা সব সামমেরিনকে পারমাণবিক হামলায় সক্ষম সাবমেরিন হিসেবে রূপান্তরের পরিকল্পনা করছে। বিষয়টিকে সরকারের পক্ষ থেকে বেশ জোরদারও করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের নৌবাহিনীকে আধুনিকায়নে জোরদার করছি। এ বিষয়ে কালক্ষেপণের কোনো সুযোগ নেই। কেননা চারপাশে আমাদের শত্রুদের আগ্রাসী মনোভাব ও সামরিক পদক্ষেপ মোকাবিলায় এর বিকল্প নেই।
এদিকে সম্প্রতি মার্কিন গোয়েন্দা দপ্তরের বরাতে রাশিয়া সফরের পরিকল্পনা করছেন কিম বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে হুঁশিয়ারি দিয়ে দেশটি বলছে, রাশিয়াকে অস্ত্র দিলে উত্তর কোরিয়ার চড়া মূল্য দিতে হবে।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হোয়াইট হাউস উত্তর কোরিয়াকে আন্তর্জাতিক নীতি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে। এ আইন অনুসারে তারা কখনোই অন্য কোনো রাষ্ট্রের কাছে অস্ত্র বিক্রি করতে পারে না। আর রাশিয়ার কাছে অস্ত্র বিক্রির মানে নিরপরাধ ইউক্রেনীয়দের হত্যায় নিজেদের সম্পৃক্ত করা। আর এমনটি করলে উত্তর কোরিয়ার জন্য কঠিন কিছু অপেক্ষা করছে।
হোয়াইট হাউসের নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাকি সুলিভান বলেন, উত্তর কোরিয়া এমনিতে প্রায় বন্ধুশূন্য। তাদের বিশ্বমঞ্চে অবস্থান একেবারে কোনঠাসা। এর মধ্যে এমন কাজ করলে তার জন্য দেশটিকে চড়া মূল্য দিতে হবে।
সুলিভান বলেন, গোয়েন্দা সূত্র বলছে, পুতিনের সঙ্গে দেখা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কিম জং উন। এ সাক্ষাতে অস্ত্র সহযোগিতার জন্য তিনি মস্কো যাবেন। আর এমনকিছু করলে তার ফল ভালো হবে না।
সম্প্রতি ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু সাম্প্রতিক উত্তর কোরিয়া সফরের সময় ‘পিয়ংইয়ংকে রাশিয়ার কাছে আর্টিলারি গোলাবারুদ বিক্রি করতে রাজি করার’ চেষ্টা করেছেন। করোনা মহামারির পর ওই সফরের মাধ্যমে প্রথম কিম বিদেশি অতিথিদের জন্য দেশের দরজা খুলে দিয়েছিলেন।
মন্তব্য করুন