নেপালে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংস বিক্ষোভ ক্রমেই চরমে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দায়িত্ব ছাড়ার পরপরই নেপাল সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে চড়ে রাজধানী কাঠমান্ডু ছেড়ে যান তিনি।
তার প্রস্থানের সময়কার ভিডিও ও ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সেখানে দেখা গেছে, অলির সরকারি বাসভবন আগুনে জ্বলছে এবং উপরে চক্কর দিচ্ছে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার। তবে এই ফুটেজগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
দুর্নীতি ও কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া আন্দোলন মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করেই শুরু হয়েছিল। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পরও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি, বরং জনগণের ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। টানা সংঘর্ষ ও দমনপীড়নে প্রাণ গেছে অন্তত ১৯ জনের, আহত হয়েছেন চার শতাধিক। পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত অলি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, পদত্যাগের আগে সেনাপ্রধান জেনারেল সিগডেলের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন অলি। বৈঠকে তিনি সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানান। তবে সেনাপ্রধান সাফ জানিয়ে দেন, অলি পদ না ছাড়লে তারা হস্তক্ষেপ করবে না। সেনাসূত্রগুলোর দাবি, অলির পদত্যাগের পর থেকেই সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় হয়েছে।
তবে অলিকে হেলিকপ্টারে করে কোথায় নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত নয়। রাজনৈতিক মহলে জল্পনা চলছে, তিনি চিকিৎসার অজুহাতে দুবাই যেতে পারেন। এমনকি হিমালয় এয়ারলাইন্সের একটি বিমান এ উদ্দেশ্যে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও খবর মিলেছে।
তার এই আকস্মিক প্রস্থান নেপালের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাকে আরও গভীর করেছে। কারণ বিক্ষোভকারীরা কেবল প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগে থেমে নেই, তারা পুরো রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কার দাবি করছে। অন্যদিকে সেনাবাহিনীর সক্রিয় ভূমিকা দেশটির গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে।
মন্তব্য করুন