কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার শস্যচুক্তি বাতিলের পর এবার ‘মানবিক করিডোর’ চালু করছে ইউক্রেন। দেশটি এবার যুদ্ধের কারণে নিজেদের বন্দরে আটকে পড়া জাহাজগুলোর জন্য করিডোর চালুর ঘোষণা দিয়েছে। খবর আলজাজিরার।
ইউক্রেন জানিয়েছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে দেশটিতে আটকে পড়া জাহাজগুলো সরিয়ে নিতে এ মানবিক করিডোর চালু করা হবে। দেশটি বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) এ ঘোষণা দেয়।
এর আগে গত ১৭ জুলাই কৃষ্ণসাগরে শস্যচুক্তি বাতিলের পর দেশটি এমন ঘোষণা দিয়েছে। এ ফলে রাশিয়ার দ্বিমতের কারণে রুটে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ফলে রুট ব্যবহারকারীরা নিরাপত্তার কথা তুলেছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম কিয়েভ ইন্ডিপেডেন্ট জানিয়েছে, রাশিয়ার হুমকির কারণে করিডোর চালুর বিষয়ে ইউক্রেনের নৌ ও সেনাবাহিনী নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন। রাশিয়া জানিয়েছে, করিডোরের এ রুটে সমুদ্রপথে মাইনসহ বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম রয়েছে।
আরও পড়ুন : রাশিয়াকে ‘ব্লাকমেইল’ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান
দেশটির সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, যেসব জাহাজের মালিক ও ক্যাপেন্টনরা এমন অবস্থা জেনেও চলার প্রস্তুতি রাখেন তারা এই করিডোর ব্যবহার করতে পারবেন। আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা সংস্থার (আইএমও) কাছে বিষয়টি অবহিত করেছে ইউক্রেন।
এদিকে রাশিয়ার শস্যচুক্তি বাতিলের সমালোচনা করেছে বিভিন্ন দেশ। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, বিশ্বের বিপর্যস্ত ও ক্ষুধার্ত মানুষের প্রতি রাশিয়ার ভ্রুক্ষেপ নেই। তারা এখনো ইউক্রেনের শস্যক্ষেতে বোমা হামলা করছে, বন্দরের প্রবেশপথে মাইন রেখে দিয়েছে এবং কৃষ্ণসাগরে শস্যবাহী জাহাজকে হুমকি দিচ্ছে।
রাশিয়ার দাবি, শস্যচুক্তি বাতিলের ফলে এ পথে জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এমতাবস্থায় এ পথে চলাচলকারী জাহাজগুলোকে সম্ভাব্য যুদ্ধের অস্ত্রবাহী হিসেবে ধরা হবে। আর জাহাজে ব্যবহৃত পতাকাটিকে ইউক্রেন যুদ্ধে তাদের সমর্থক হিসেবে ধরা হবে। পশ্চিমা বিশ্ব যুদ্ধে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তার মাধ্যমে তাদের পক্ষ নিয়েছে বলেও অভিযোগ করে আসছে রাশিয়া।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের জুলাইয়ে রাশিয়া-ইউক্রেনের মাঝে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় কৃষ্ণসাগর শস্যচুক্তি হয়। এ চুক্তির আওতায় কৃষ্ণসাগর দিয়ে বিনা বাধায় এতদিন খাদ্যশস্য রপ্তানি করে আসছিল ইউক্রেন। তবে দাবি-দাওয়া পূরণ না হওয়ায় গত ১৭ জুলাই এ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায় রাশিয়া। মস্কোর দাবি, পশ্চিমাদের দেওয়া শস্য ও সার রপ্তানিতে বিধিনিষেধ তুলে নিলেই এই করিডোর পুনরায় চালু করা হবে।
অন্যদিকে ইউক্রেন বলেছে, রাশিয়া সহযোগিতা করুক আর না-ই করুক তারা বিশ্বে খাদ্যশস্য রপ্তানি চালিয়ে যাবে। কেননা বিশ্বকে খাদ্য সংকটে ফেলার অধিকার কারও নেই। জাতিসংঘও বলছে, রাশিয়ার এমন পদক্ষেপ বিশ্ব খাদ্য পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তুলবে।
মন্তব্য করুন