ইউক্রেনীয় বাহিনীর হামলায় রাশিয়ার শীর্ষ জেনারেল ও নৌবাহিনীর উপপ্রধান মিখাইল গুডকভ নিহত হয়েছেন। সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলে এক সামরিক অভিযানে অংশ নেওয়ার সময় ইউক্রেনীয় বাহিনীর হামলার শিকার হন তারা। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তার মৃত্যুর বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করে।
রুশ সংবাদমাধ্যম তাস জানিয়েছে, ৪২ বছর বয়সী গুডকভ রাশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহরের ১৫৫তম পৃথক মেরিন ব্রিগেডের সাবেক কমান্ডার ছিলেন। ইউক্রেনে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’-এর শুরু থেকেই তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে সক্রিয় ছিলেন। ২০২৫ সালের মার্চ মাসে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাকে রুশ নৌবাহিনীর উপপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন। এই পদে তিনি দেশের সামগ্রিক মেরিন, উপকূলীয় ক্ষেপণাস্ত্র এবং আর্টিলারি বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।
গুডকভের মৃত্যুর খবর দেন রাশিয়ার প্রিমোরিয়ে অঞ্চলের গভর্নর ওলেগ কোজেমিয়াকো। তিনি টেলিগ্রামে জানান, গুডকভের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু নারিমান শিখালিয়েভও একই অভিযানে নিহত হয়েছেন। গভর্নর বলেন, গুডকভ দায়িত্ব গ্রহণের পরও ফ্রন্টলাইনে গিয়ে মেরিন সেনাদের সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটাতেন এবং যুদ্ধপরিস্থিতি স্বচক্ষে পর্যবেক্ষণ করতেন।
গুডকভের মৃত্যুতে রাশিয়ার সামরিক ও রাজনৈতিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। একাধিক বিশ্লেষক বলছেন, গুডকভ ছিলেন রুশ মেরিন বাহিনীর আধুনিকায়নে গুরুত্বপূর্ণ এক ব্যক্তি। তার নেতৃত্বে ১৫৫তম মেরিন ব্রিগেড ইউক্রেন যুদ্ধের নানা পর্বে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে।
এদিকে যুদ্ধময় কুরস্ক সীমান্তে এই পর্যায়ের একজন জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার মৃত্যু রাশিয়ার জন্য একটি বড় ধাক্কা বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। ইউক্রেন-রাশিয়া চলমান সংঘাতে এটি রুশ বাহিনীর উচ্চপর্যায়ের অন্যতম বড় প্রাণহানি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
গুডকভের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রুশ রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমগুলো তাকে ‘দেশপ্রেমিক, সাহসী এবং নিবেদিতপ্রাণ’ সেনা কর্মকর্তা হিসেবে অভিহিত করেছে। তার মৃত্যুতে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা সহজে পূরণ হওয়ার নয় বলেও মত বিশ্লেষকদের।
মন্তব্য করুন