দশ দিন ধরে কারাগার থেকে নিখোঁজ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক ও বিরোধীদলীয় নেতা আলেক্সি নাভালনি। এই ১০ দিন তার সঙ্গে দেখা করতে পারেননি কোনো আইনজীবী। তিনি কোথায় আছেন তা-ও জানেন না তারা। অবশেষে রুশ কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নাভালনিকে দেশের অন্য একটি কারাগারে নেওয়া হচ্ছে। তিনি সেখানে পৌঁছালে সে তথ্য প্রকাশ করা হবে। খবর রয়টার্সের।
এতদিন মস্কো থেকে ২৩৫ কিলোমিটার পূর্বে ভ্লাদিমির অঞ্চলের আইকে-৬ কারাগারে সাড়ে ১১ বছরের সাজা খাটছিলেন নাভালনি। এই সাজা খাটার মধ্যে গত আগস্টে এক ফৌজদারি মামলায় তাকে আরও ১৯ বছরের কারাদণ্ড দেয় রাশিয়ার একটি আদালত। এরপর থেকে নাভালনির সহযোগীরা ধারণা করছিলেন, তাকে রাশিয়ার সবচেয়ে কঠোর কারা ব্যবস্থা হিসেবে পরিচিত বিশেষ রিজিম কলোনিতে সরিয়ে নেওয়া হতে পারে। এই ধরনের কারাগার রাশিয়ায় ৩০টির মতো রয়েছে।
রাশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা কারাগারে বন্দিদের ট্রেনে করে নেওয়া হয়। এই বন্দি স্থানান্তরে কয়েক সপ্তাহ লেগে যায়। এই সময়টাই তাদের অবস্থান ও স্বাস্থ্য সম্পর্ক কোনো তথ্য পাওয়া যায় না।
নাভালনির সহযোগীরা বলেছেন, গত ৬ ডিসেম্বর থেকে নাভালনির সঙ্গে আইনজীবীরা দেখা করতে পারছেন না। এ কারণে তার অবস্থান নিয়ে তাদের মাঝে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সোটা ডট ভিশন নামে রাশিয়ার একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার আদালতে নাভালনির ওপর একটি নোট পেশ করেছে ভ্লাদিমির অঞ্চলের কারা কর্তৃপক্ষ। ওই নোট অনুযায়ী, আদালতের রায় মেনে ভ্লাদিমির অঞ্চলের বাইরে অবস্থিত সংশোধনী কেন্দ্রের উদ্দেশে আইকে-৬ কারাগার ত্যাগ করেছেন নাভালনি। বর্তমান আইন মেনে সেখানে তিনি পৌঁছালে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
পুতিন ও রুশ সামরিক অভিজাত নেতাদের বিরুদ্ধে বেশ সরব ৪৭ বছর বয়সি নাভালনি। ২০২০ সালের আগস্টে সাইবেরিয়ার টমসক শহর থেকে উড়োজাহাজে করে মস্কোয় ফেরার পথে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর তাকে প্রথমে সাইবেরিয়ার একটি হাসপাতালে এবং সেখান থেকে চিকিৎসার জন্য জার্মানির বার্লিনে নেওয়া হয়। জার্মানির চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি।
একই বছরের সেপ্টেম্বরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞরা জানান, নাভালনিকে রুশ নার্ভ এজেন্ট ‘নোভিচক’ বিষ প্রয়োগ করেছে। এ জন্য সরাসরি পুতিনকে দায়ী করে আসছেন নাভালনি। যদিও পুতিন এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এমন পরিস্থিতিতে ক্রেমলিনের হুমকি উপেক্ষা করে ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি দেশে ফিরলে মস্কো বিমানবন্দরেই তাকে গ্রেপ্তার করে রুশ কর্তৃপক্ষ। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মন্তব্য করুন