মানহানির মামলায় ভারতীয় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সাজার ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। আজ শুক্রবার (৪ আগস্ট) সাজার ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে রাহুল গান্ধীর করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট। খবর এনডিটিভি।
বিচারপতি বিআর গাভাই, পিএস নরসিমা ও সঞ্জয় কুমারের সমন্বয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ রাহুল গান্ধীর আবেদনের শুনানি করেন। এই শুনানিতে তার প্রতিনিধিত্ব করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট অভিষেক মনু সিংভি। তিনি বলেন, সংসদ সদস্য হিসেবে সংসদে অংশগ্রহণ করতে এবং নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে রাহুলকে মুক্তি পেতে হবে। আর এটিই রাহুলের সর্বশেষ সুযোগ। এমনকি এ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কারণে তিনি সংসদের দুটি অধিবেশনে যোগ দিতে পারেননি।
এরপর সুপ্রিম কোর্ট জানান, এই মামলায় বিচারক রাহুলকে সর্বোচ্চ দুই বছরের সাজা দিয়েছেন। কিন্তু সাজা একদিন কম হলেই তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে অযোগ্য হতেন না। এমনকি তাকে কী জন্য সর্বোচ্চ দুই বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে, তা-ও বলতে পারেনি বিচারক আদালত।
আরও পড়ুন : হাইকোর্ট থেকেও আশার কথা শুনলেন না রাহুল
সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের ফলে এখন এমপি পদ ও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে রাহুলের আর কোনো বাধা রইল না।
এর আগে এই সাজার ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে রাহুলের করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলেন গুজরাট হাইকোর্ট। গুজরাট হাইকোর্ট সাজার ওপর স্থগিতাদেশ না দেওয়ায় সুপ্রিম কোর্ট ছিলই রাহুলের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল।
২০১৯ সালে কর্নাটকে এক নির্বাচনী প্রচারে রাহুল প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘‘সব চোরেদের পদবি ‘মোদি’ হয় কেন?” এ মন্তব্যের পর রাহুলের বিরুদ্ধে ‘পদবি অবমাননার’ অভিযোগে গুজরাটের সুরাটের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মানহানির মামলা করেন বিজেপি নেতা পূর্ণেশ মোদি।
এরপর এ মামলায় গত ২৩ মার্চ গুজরাটের সুরাটের ম্যাজিস্ট্রেট আদালত রাহুলকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন। তবে এ সময় রাহুলের জামিন আবেদন মঞ্জুর করে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদনের জন্য ৩০ দিন সময় দিয়েছিলেন বিচারক।
এ রায়ের ভিত্তিতে ২৪ মার্চ রাহুলের সংসদ সদস্যের পদ খারিজ করে দেন ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। এমনকি তাকে সরকারি বাসভবনও ছেড়ে দিতে হয়।
পরে গত ৩ এপ্রিল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এই রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে সুরাটেরই দায়রা জজ আদালতে আবেদন করেন রাহুল। কিন্তু ২০ এপ্রিল অতিরিক্ত দায়রা জজ বিচারক আরপি মোগেরা সেই আবেদন খারিজ করে সাজা কার্যকরের রায় বহাল রাখেন। এরপর হাইকোর্টে দ্বারস্থ হন তিনি। হাইকোর্টও সাজার ওপর স্থগিতাদেশ না দেওয়ায় রাহুলকে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে হয়েছে।
মন্তব্য করুন