কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

মধ্যরাতের একটি ফোনেই রাজনীতিতে এনেছিল মনমোহন সিংকে

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। ছবি : সংগৃহীত
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। ছবি : সংগৃহীত

নেদারল্যান্ডস সফররত মনমোহনের হোটেলে মধ্যরাতে হঠাৎই বেজে উঠল ফোন। আর সে ফোনই রাতারাতি রাজনীতির আঙিনায় নিয়ে আসে ‘অরাজনৈতিক’ মনমোহন সিংহকে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান হিসেবে নেদারল্যান্ডসে গিয়েছেন মনমোহন। একটি সম্মেলনে বক্তৃতা করে হোটেলে ফিরে বিশ্রাম করছেন তিনি। তখনই বেজে ওঠে ফোন।

ফোনের ও পারে ছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিংহ রাওয়ের প্রধান সচিব পিসি আলেকজান্ডার। মনমোহনকে তিনি স্পষ্টই জানালেন যে, অর্থমন্ত্রী হিসেবে তাকে নিজের মন্ত্রিসভায় চাইছেন প্রধানমন্ত্রী পিভি রাও।

কন্যা দামন সিংহের বই ‘স্ট্রিক্টলি পার্সোনাল : মনমোহন অ্যান্ড গুরশরণ’-এ মনমোহন সিং এই প্রসঙ্গে বলছেন, ‘উনি (আলেকজান্ডার) আমাকে মজা করে বললেন যে, যদি সব কিছু ঠিকভাবে এগোয়, তবে সব কৃতিত্ব আমাদের। আর যদি তা না-হয় তবে আপনাকে সরিয়ে দেওয়া হবে।’

পিভির মন্ত্রিসভায় যোগ দিতে রাজি হয়েছিলেন তৎকালীন ইন্ডিয়ান রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর মনমোহন। ১৯৯১ সালের ২১ জুন দেশবাসীকে তো বটেই, কংগ্রেসের বহু নেতাকে অবাক করে দিয়ে রাষ্ট্রপতি ভবনে অর্থমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন তিনি। বাকিটা ইতিহাস।

দেশ এবং বিশ্ব অর্থনীতির এক টালমাটাল সময়ে অর্থনীতির হাল ধরেছিলেন মনমোহন। পিভির জমানায় অর্থমন্ত্রী হিসেবে দেশের আর্থিক সংস্কার কর্মসূচির সঙ্গে একাকার হয়ে গিয়েছে মনমোহনের নাম। অর্থনীতির সব গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে পুরোদস্তুর সরকারি নিয়ন্ত্রণ সরিয়ে বেসরকারি পুঁজি, ক্ষেত্রবিশেষে বিদেশি পুঁজিকেও জায়গা করে দেওয়ার রাস্তা তৈরি হয়েছিল মনমোহনের হাতে। পাঁচ বছর অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন তুমুল বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন তিনি।

এক দিকে প্রবল নিন্দা আর প্রতিবাদ, অন্য দিকে দু’হাত তুলে প্রশংসা আর সমর্থন। তবে অর্থনীতির পালে হাওয়া জোগাতে কোনো প্রাজ্ঞ রাজনীতিক নন, ‘অর্থনীতিবিদ’ মনমোহনকেই বেছে নিয়েছিলেন পিভি।

মনমোহন চেয়েছিলেন সেটুকুই। চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী যেন স্বাধীনভাবে তাকে কাজ করার সুযোগ দেন। সে স্বাধীনতা পেয়েছিলেন মনমোহন। কন্যার বইতে মনমোহন পিভি সম্পর্কে বলছেন, ‘প্রথম দিকে উনি সংশয়ী ছিলেন। পরে উনি বুঝতে পারলেন আমরা সঠিক কাজই করছি। এ ছাড়া অন্য পথ ছিল না। কিন্তু উনি বারবার বলতেন যে, আমরা যেন মধ্যপন্থা অবলম্বন করি। অর্থনৈতিক উদারীকরণের পাশাপাশি দেশের প্রান্তিক মানুষ, বিশেষত গরিবদেরও যেন যত্ন নেওয়া হয়।’

অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার সামলানো মনমোহন রাজনীতির সিঁড়ি বেয়ে ২০০৪ সালে দেশের প্রধানমন্ত্রী হন। ২০১৪ সাল পর্যন্ত একটানা ১০ বছর ওই পদে ছিলেন তিনি।

সূত্র : আনন্দবাজার

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মুক্ত আকাশে ফাঁদে আটকা ৯০টি শালিক পাখি

রামপুরায় ২৮ জনকে হত্যা : অভিযোগ গঠনে শুনানির তারিখ নির্ধারণ

প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইল রিয়াল মাদ্রিদ

দুর্নীতি চাওয়া না চাওয়ার মধ্যে ফাঁক রয়েছে : দুদক চেয়ারম্যান

বিয়ে নিয়ে নিরাপত্তা জটিলতায় টেলর সুইফট

পুরো অ্যাশেজ থেকেই কি ছিটকে গেলেন অজি তারকা?

দুর্ঘটনায় দুই বন্ধু নিহত, শেষ স্ট্যাটাস ভাইরাল

ঢাবি শিক্ষক কার্জনের জামিন

৩ বছর বিদেশে থেকেও ভোগ করেন বেতন-ভাতা

রহস্যময় বেলুনে লিথুনিয়ার বিমানবন্দর বন্ধ

১০

বাউল শিল্পী-সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনায় এনসিপির নিন্দা

১১

রাতে ঘুমানোর আগে ঘরোয়া টোটকায় পা হবে নরম তুলতুলে

১২

সিনিয়রদের মুখের ভাষাকে দুর্ভিক্ষ বলে এনসিপি নেতার পদত্যাগের ঘোষণা

১৩

‘আগামী ৫ বছরে মামলার সংখ্যা ৫০ শতাংশ কমবে’

১৪

২৪ ঘণ্টায় ১১৮ ভূমিকম্প

১৫

রোনালদোর অবিশ্বাস্য বাইসাইকেল কিকে আল-নাসরের টানা নবম জয়

১৬

দেড় বছর পর টেস্ট দলে ফিরলেন কেন উইলিয়ামসন

১৭

মার্কিন ভিসা না পাওয়ায় ভারতীয় চিকিৎসকের আত্মহত্যা

১৮

২৪ ঘণ্টার মধ্যে লঘুচাপ সৃষ্টির আভাস

১৯

বনশ্রীতে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল নারীর

২০
X