

সৌন্দর্য নিয়ে ঈর্ষায় নিজের ছেলেসহ চারজনকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক মায়ের বিরুদ্ধে। বিয়েবাড়ি থেকে ছয় বছরের এক মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (০৩ ডিসেম্বর) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ভারতের হরিয়ানার পানিপথ এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, পানিপথের নৌলথা গ্রামের বাসিন্দা পুণম নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি সৌন্দর্য নিয়ে চরম হিংসা ও ঈর্ষার কারণে নিজের ভাইঝিকে হত্যা করেছেন। তদন্তে উঠে এসেছে, এর আগেও তিনি একই কারণে তিনটি শিশুকে হত্যা করেছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে তার নিজের তিন বছরের ছেলেও রয়েছে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, মারা যাওয়া শিশু বিধি সোনিপতের বাসিন্দা। সে মা-বাবা, দাদা-দাদি ও ১০ মাসের ছোট ভাইকে নিয়ে নৌলথা গ্রামে আত্মীয়ের বিয়েতে এসেছিল। সোমবার দুপুরে বারাত বাড়িতে পৌঁছলে সবাই বাইরে ভিড় করছিল। এই সময় পুণম দেখে বিধি বাড়ির ছাদে উঠে যাচ্ছে। তিনি তাকে অনুসরণ করে ছাদে যান, কথা বলতে বলতে তাকে স্টোররুমে নিয়ে যান। সেখানে রাখা পানিভর্তি টবের ভেতরে দাঁড়াতে বলেন। বিধি দাঁড়াতেই পুণম জোর করে তার মাথা পানিতে চেপে ধরে তাকে হত্যা করেন। এরপর বাইরে থেকে দরজা আটকে নেমে আসেন।
এ ঘটনার পর পরিবারের লোকজন বিধিকে খুঁজতে থাকেন। প্রায় এক ঘণ্টা পর দাদি ওমবতী স্টোররুম খুলে বিধির মাথা পানিতে ডুবানো অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তাকে দ্রুত এনসি মেডিকেল কলেজে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে পুণমের আগেও তিনি তিনটি শিশুকে হত্যা করেছেন বলে স্বীকার করেছেন। এর মধ্যে ২০২৩ সালে তিনি বোন-শাশুড়ির ৯ বছরের মেয়ে ইশিকাকে পানি ট্যাংকে ডুবিয়ে হত্যা করেন। একই বছরে সন্দেহ এড়াতে নিজের ৩ বছরের ছেলে শুভমকে একইভাবে হত্যা করেন। এছাড়া ২০২৪ সালের আগস্টে সিওয়াহ গ্রামে কাজিনের ৬ বছরের মেয়ে জিয়াকে ‘আরও সুন্দর’ হওয়ায় হত্যা করেন তিনি।
এনডিটিভ জানিয়েছে, এতদিন এসব মৃত্যুকে দুর্ঘটনা হিসেবে ধরা হয়েছিল। বিধি হত্যাকাণ্ডের তদন্তেই এই ধারাবাহিক শিশু হত্যার রহস্য ফাঁস হয়ে যায়।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পুণম মোট চারটি শিশুকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে। সবগুলো হত্যাই একই পদ্ধতিতে তথা পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, তিনি বিশেষভাবে ‘দেখতে সুন্দর, ছোট মেয়েদের’ লক্ষ্য করতেন।
মন্তব্য করুন