এবারের বর্ষার মৌসুমে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় পার্বত্য রাজ্য হিমাচল প্রদেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট বন্যা, বজ্রপাত ও ভূমিধসে গত ২০ জুন থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত হিমাচলে অন্তত ১৮৪ জনের প্রাণ গেছে। এছাড়া বন্যা ও ভূমিধসের কারণে রাজ্যের ৩০৫টি জাতীয় মহাসড়কসহ ৩০৯টি সড়ক পুরোপুরি বন্ধ আছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত দুই সপ্তাহ ধরে প্রবল বর্ষণ, বন্যা ও ভূমিধসের জেরে রাজ্যজুড়ে পানি সরবরাহসংক্রান্ত ২৩৬টি জলাধার এবং ১১৩টি বিদ্যুৎ সরবরাহ ট্রান্সফরমার ধ্বংস হয়ে গেছে। ফলে রাজ্যের বহু এলাকায় দেখা দিয়েছে পানি ও বিদ্যুৎ সংকট।
এ ছাড়া, নিহতদের মধ্যে ১০৩ জন ভূমিধস (১৭ জন), আকস্মিক বন্যা (আটজন), মেঘভাঙা বৃষ্টি (ক্লাউডবার্স্ট-১৭ জন), বিদ্যুৎপৃষ্ট (সাতজন) বন্যার পানিতে ডুবে (২০ জন) ও বর্ষণসংক্রান্ত বিভিন্ন দুর্যোগে মারা গেছেন। বাকি ৮১ জন মারা গেছেন সড়ক দুর্ঘটনায়।
রাজ্যের মান্দি জেলায় প্রাণহানির ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে। মান্দির বিভিন্ন এলাকায় বর্ষাজনিত দুর্যোগে মারা গেছেন ১৪ জন এবং সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের।
বন্যার কারণে রাজ্যের ৮৮ হাজার ৮০০ একর জমির ফসল সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের (আইএমডি) পূর্বাভাসে কোনো সুসংবাদ পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ পূর্বাভাসে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী আরও কয়েক দিন হিমাচলের বিভিন্ন এলাকায় থেমে থেমে কিংবা লাগাতার বর্ষণ অব্যাহত থাকবে।
ভৌগোলিক কারণেই বর্ষাকালে ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় প্রবল বর্ষণ, আকস্মিক বন্যা, ভূমিধসের ঘটনা বেশি হয়ে থাকে হিমাচল প্রদেশে। তার ওপর গত কয়েক বছর ধরে অপরিকল্পিত নগরায়ন ও বনাঞ্চল ধ্বংস দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
সম্প্রতি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এই মর্মে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, অপরিকল্পত নগরায়ন, শিল্পায়ন ও প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ধ্বংসে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে হয়তো শিগগিরই একদিন ভারতের মানচিত্র থেকে হিমাচল রাজ্যের নাম মুছে যাবে।
মন্তব্য করুন