ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ভোট গণনা চলছে। ঘোষিত হচ্ছে বিভিন্ন আসনের বিজয়ীর নাম। মঙ্গলবার (৪ জুন) নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে রাত ১১টা ১১মিনিট পর্যন্ত মোট ৪৬৭টি আসনের চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি জয় পেয়েছে ২১৬টি আসনে। অন্যদিকে, ৮৪টি আসনে জিতেছে কংগ্রেস। অন্যান্য দলগুলো বাকি আসনগুলো পেয়েছে।
এর মধ্যে ৩৫টি আসনে জয় পেয়েছে সমাজবাদী পার্টি (এসপি)। অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ২৭টি আসন । ডিএমকে ১৩টি, জনতা দল (জেডি-ইউ) ১২টি, তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) ৮টি, শিবসেনা (উদ্ভব) ৬টি, শিবসেনা (এসএইচএস) ৬টি, লোক জনশক্তি পার্টি (রাম বিলাস) ৪টি ও সিপিআই (এম) ৪টি আসনে জয় পেয়েছে। আম আদমি পার্টি, ওয়াইএসআরসিপি ও ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) ৩টি করে আসন পেয়েছে।
জনতা দল (জেডি-এস), জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্স (জেকেএন), কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (সিপিআই), কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মার্ক্সিস্ট–লেনিনিস্ট) (লিবারেশন)–সিপিআই (এমএল) (এল), রাষ্ট্রীয় লোক দল (আরএলডি), ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপিএসপি), ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগ (আইইউএমএল) ২টি করে আসনে জয় পেয়েছে। এছাড়া কয়েকটি দল একটি করে আসনে জয় পেয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ৬জন।
ভারতের নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের তথ্য মতে, বিজেপি ২২টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। ১৪টি আসনে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস। সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ২টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেসও ২টি আসনে এগিয়ে রয়েছে।
ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ৫৪৩ সদস্যের লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে একটি দল বা জোটের প্রয়োজন ২৭২টি আসন। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফলে এটা নিশ্চিত যে, বিজেপি এককভাবে ক্ষমতায় আসতে পারছে না। বিজেপি যেসব আসনে এগিয়ে রয়েছে, সেগুলোতে জয় ধরলেও আসন সংখ্যা দাঁড়ায় ২৪০টি। অন্যদিকে একই হিসাবে কংগ্রেসের আসনসংখ্যা দাঁড়ায় ৯৪টি।
এদিকে, নির্বাচনের ফল ঘোষণা শেষ হওয়ার আগেই নরেন্দ্র মোদির এনডিএ জোটের ভেতরে-বাইরের বেশ কয়েক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে কংগ্রেস। কংগ্রেস এসব নেতাকে জোটবদল করে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোটে যোগ দিয়ে সরকার গঠনের প্রস্তাব দিচ্ছে।
হিন্দুস্তান টাইমস জানতে পেরেছে, এনডিএ জোটের শরিক অন্ধ্র প্রদেশের তেলেগু দেশম পার্টির (টিডিপি) প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডু এবং বিহারের জনতা দল ইউনাইটেডের (জেডি-ইউ) প্রধান নীতীশ কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন কংগ্রেস প্রধান মল্লিকার্জুন খাগড়ে। এ ছাড়া ওডিশার নবীন পাটনায়েকের বিজু জনতা দল (বিজেডি) এবং বিহারের লোক জনশক্তি পার্টির (রাম বিলাস) সঙ্গেও কথা হয়েছে তার।
বিহারে সবাইকে অবাক করে দিয়ে ১৫টি লোকসভা আসনে এগিয়ে রয়েছে নীতীশ কুমারের দল। রাজ্যটিতে বিজেপি পাচ্ছে মাত্র ১৩টি আসন। একই জোটের দুই দল হিসেবে জেডি-ইউ বিজেপির প্রতি সমর্থন দিয়ে আসছে। নীতীশের সঙ্গে খাগড়ের যোগাযোগের বিষয়ে জেডি-ইউর এক নেতা হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছেন, তার দলের অবস্থান বদলের সম্ভাবনা কম।
নীতীশ কুমার এ বছরেই এনডিএ জোটে যোগ দিয়েছেন। এর আগে তিনি কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোটের শীর্ষস্থানীয় একজন নেতা ছিলেন। কংগ্রেসের এক নেতা বলেছেন, আজ মঙ্গলবার নীতীশ কুমারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা সম্রাট চৌধুরী। তবে তিনি দেখা করেননি।
কংগ্রেস নেতাদের আশা, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেকেও ইন্ডিয়া জোটে যোগ দেওয়ার বিষয়ে রাজি করাতে পারবেন তারা। শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা রাজ্যটিতে ১০ আসনে এগিয়ে রয়েছে। শিবসেনার আরেক অংশের নেতা উদ্ভব ঠাকরের সঙ্গেও তাদের কথা হয়েছে।
বিজেডির নবীন পাটনায়েক বিজেপি বা কংগ্রেস—দুই দলের থেকেই সমান দূরত্ব বজায় রেখেছিল। তবে হিন্দুস্তান টাইমস জানতে পেরেছে, ওডিশা বিধানসভায় নিজেদের সুযোগ বাড়ানোর জন্য কংগ্রেসের সহায়তা চেয়েছে বিজেডি। ২০১৯ সালে রাজ্যটির বিধানসভায় কংগ্রেসের আসন ছিল নয়টি। তবে এখন দলটির দখলে রয়েছে ১৬টি আসন।
মন্তব্য করুন