কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩৬ এএম
আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৪১ এএম
অনলাইন সংস্করণ

যে কারণে পশ্চিমারা ‘শিয়া-সুন্নি বিভেদ’ জিইয়ে রাখে

মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্র। ছবি : সংগৃহীত
মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্র। ছবি : সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যে আরব-ইসরায়েল সংঘাতের চেয়েও বেশি প্রভাবশালী সংঘাত হিসেবে পরিচিত শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্ব। সুন্নি অধ্যুষিত অঞ্চলটিতে ইরান, ইরাক, লেবানন ও ইয়েমেনে শিয়া মুসলিমরা প্রভাবশালী বলে পরিচিতি। ফলে অঞ্চলটিতে নিজেদের স্বার্থ টিকিয়ে রাখতে সুন্নিদের অবশ্যই শিয়াদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে।

শিয়াদের অবশ্যই সুন্নিদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে এমন মন্ত্র ছড়াচ্ছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। লন্ডনভিত্তিক সংবামাধ্যম দ্য মিডল ইস্ট আইয়ের প্রকাশিত এক মতামতে এমনটা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম লিবারেল আর্টস কলেজ জয়তুনা কলেজের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং ইসলামিক আইন ও ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক হাতেম বাজিয়ান।

মতামতে বলা হয়, পশ্চিমা দেশগুলো এবং তাদের মিত্ররা মধ্যপ্রাচ্যের সুন্নি-শিয়া বিভেদকে অতিরঞ্জিত করে দেখায় এবং পরস্পরকে অবিরাম যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলে। এই ধারণা পশ্চিমা রাজনৈতিক নেতারা, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, মিডিয়া এবং বিশেষভাবে নির্বাচিত ধর্মীয় নেতাদের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছে। তারা শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে তারা মৃত্যু ও ধ্বংসের কারবারি হিসেবে কাজ করছে।

অধ্যাপক বাজিয়ান মনে করেন, পশ্চিমা দেশগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে সুন্নি-শিয়া বিভেদ বাড়িয়ে তুলে তাদের চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধ, জায়নবাদী সহিংসতা এবং মধ্যপ্রাচ্যে বিদেশি হস্তক্ষেপকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করে। এখানে সংঘাত যাতে চলতেই থাকে, সে জন্য অনেক শক্তি ও গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক কাজ করে যাচ্ছে।

বাজিয়ানের মতে, আজকের মধ্যপ্রাচ্যে যে আঞ্চলিক সংঘাত চলছে, তার মূল কারণ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বিপুল মজুত। এই তেল ও গ্যাস বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উনিশ শতকে প্রাকৃতিক সম্পদ এবং বাজার দখলের জন্য ব্রিটেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, ইতালি ও বেলজিয়াম তাদের সামরিক, অর্থনৈতিক ও জ্ঞানতাত্তিক প্রভাব খাটিয়েছিল।

এই গবেষক জানান, আরবের স্থানীয় মানুষের মতাদর্শগত বিভাজন আগে থেকেই ছিল। কিন্তু ঔপনিবেশিকতা এবং ইউরোপের লোভ সেই বিভাজনকে আরও জাগিয়ে তুলে সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। ফলে সমাজগুলো নিজেদের প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। এভাবে ঔপনিবেশিক শক্তিগুলো খুব সস্তায় অধিকতর প্রাকৃতিক সম্পদ ও বাজার দখল করতে পেরেছে।

মতামতে বলা হয়, পশ্চিমা ঔপনিবেশিক প্রকল্পগুলো জায়নবাদীদের সাহায্য করেছে এবং আরব অঞ্চলে আধুনিক জাতিরাষ্ট্র গঠনে ভূমিকা রেখেছে। ঔপনিবেশিক শাসন চলে গেলেও, পশ্চিমাদের অর্থনৈতিক, শিক্ষা এবং সামাজিক ও ধর্মীয় কাঠামো এখনো রয়ে গেছে। ঊনবিংশ ও বিংশ শতকে ব্রিটিশ ও ফরাসিরা তাদের ঔপনিবেশিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে সুন্নি-শিয়া বিভাজনকে বাড়িয়ে তুলেছিল। মূলত, তাদের আসল উদ্দেশ্য ছিল প্রাকৃতিক সম্পদ ও বাণিজ্যপথ নিয়ন্ত্রণ করা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাকসু নির্বাচন / শের-ই বাংলা হলের ফল ঘোষণা

জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নেবে না এনসিপি

রাকসুতে জুলাই-৩৬ হলের ফল ঘোষণা

রাকসু নির্বাচন / রহমতুন্নেসা হলের ফল ঘোষণা

জুলাই সনদ বাংলাদেশের জন্য একটা বিরাট মাইলফলক : খালেদা জিয়া

সম্মতি ছাড়াই ঢাবির দুই অধ্যাপককে কমিটিতে রাখল ইউটিএল

ঢাকায় ১০ কোটি টাকার বাজেটে নারী কাবাডি বিশ্বকাপ

রাকসু নির্বাচন / খালেদা জিয়া হলের ফল ঘোষণা

রাকসুতে ৩ হলের ফল ঘোষণা, এগিয়ে যারা

সেমিফাইনালে থামলেন জারিফ

১০

বরিশালে কালবেলার বর্ষপূর্তি উদযাপন / ‘আগামী দিনেও জনগণের কথা বলবে কালবেলা’

১১

রাকসুতে রোকেয়া হলের ফল ঘোষণা

১২

পুরো ভবনটিই জ্বলছে, থেমে থেমে বিস্ফোরণ

১৩

রাকসুর এক হলের ফল ঘোষণা, ভিপি-এজিএসে এগিয়ে শিবির

১৪

তিন পেরিয়ে চারে কালবেলা / সত্য-সুন্দর-সাহসের অভিযাত্রায় নতুন স্বপ্ন

১৫

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা 

১৬

কুষ্টিয়ায় কালবেলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

১৭

চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে বক্তারা / পরিশুদ্ধ সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবে কালবেলা

১৮

ফরিদপুর বিভাগ বাস্তবায়ন দাবিতে পদযাত্রা ও গণসমাবেশ

১৯

সিলেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সুধীজনদের মিলনমেলা / ‘কম সময়ে কালবেলা প্রত্যাশার চেয়ে বেশি অবদান রাখছে’

২০
X