ইসরায়েলি হামলায় গাজা এখন ধ্বংসস্তূপ। সেই ধ্বংসস্তূপে একের পর এক মিলছে মরদেহ। নিহতের তালিকায় যোগ হচ্ছে নতুন নতুন নাম। এসবের কিছু মৃত্যু গত বছরের বা তারও আগের। ইসরায়েলি বাহিনীর বাধার কারণে তখন ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে মরদেহগুলো উদ্ধার সম্ভব হয়নি।
গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হলে উদ্ধারকারী দল অবরুদ্ধ এলাকাগুলোতে যাওয়ার সুযোগ পায়। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি চিকিৎসক ও উদ্ধারকারী দল গাজা উপত্যকার ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও ২২টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। যার ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যার যুদ্ধে মোট মৃতের সংখ্যা ৪৮,৩১৯ এ পৌঁছেছে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ জন আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ফলে ইসরায়েলি হামলায় আহতের সংখ্যা ১,১১,৭৪৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, অনেক ভুক্তভোগী এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন। কারণ, উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও, গাজার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দ্বারা প্রায় প্রতিদিনই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের খবর দিচ্ছে। কোথাও কোথাও সেনারা অহেতুক গুলি ছুড়ে ফিলিস্তিনিদের হতাহত করার প্রমাণও মিলেছে।
এদিকে গাজার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে নতুন পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে আরব দেশগুলো। গাজার ওপর মার্কিন নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং সেখানকার বাসিন্দাদের বহিষ্কারে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে একজোট হয়েছে তারা। আজ শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সৌদি আরবে গাজা নিয়ে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন আরব নেতারা। রিয়াদের কূটনৈতিক ও সরকারি সূত্র এ বৈঠকের কথা নিশ্চিত করেছে।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজার ওপর আমেরিকান নিয়ন্ত্রণ এবং সেখানকার বাসিন্দাদের বহিষ্কারের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে শুক্রবার সৌদি আরবে আরব নেতারা একত্রিত হবেন।
খবরে বলা হয়, বৈঠকে ফিলিস্তিন নিয়ে খসড়া নানা প্রস্তাব আলোচনা হতে পারে। এসব প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে উপসাগরীয় দেশগুলোর নেতৃত্বে ফিলিস্তিন পুনর্গঠন তহবিল গঠন। এ ছাড়া হামাসকে পাশ কাটিয়ে একটি নতুন শাসন কাঠামো ঠিক করা। তবে বৈঠকের মূল বিষয় থাকবে গাজার বাসিন্দাদের তাদের ভূমি থেকে না সরিয়ে কীভাবে পুনর্গঠন কাজ শুরু করা যায় তা নিয়ে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিকল্পনা আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বিরল ঐক্যের সূত্রপাত করেছে। তারা ট্রাম্পের এই ধারণাকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড কে শাসন করবে এবং পুনর্গঠনের জন্য কে অর্থ প্রদান করবেন তা নিয়ে এখনো তাদের মধ্যে মতানৈক্য হতে পারে।
মন্তব্য করুন