ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় প্রস্তাবিত একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মতি জানিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। তবে চুক্তিটি ইসরায়েল গ্রহণ না করায় শান্তির সম্ভাবনা আপাতত অনিশ্চিতই থেকে গেছে।
সোমবার (২৬ মে) বার্তাসংস্থা রয়টার্স ও আল জাজিরা প্রকাশিত পৃথক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে হামাসের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকোফের পক্ষ থেকে পাঠানো যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাস রাজি হয়েছে।
এই প্রস্তাব অনুযায়ী, ৭০ দিনের যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে হামাস পর্যায়ক্রমে ১০ জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে এবং ইসরায়েল আংশিকভাবে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে।
সূত্রটি আরও জানায়, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে একইসঙ্গে ইসরায়েলি কারাগার থেকে দীর্ঘদিন ধরে বন্দি থাকা অসংখ্য ফিলিস্তিনিকেও মুক্তি দেওয়া হবে। এই যুদ্ধবিরতির সময় শর্তহীনভাবে গাজায় ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি থাকবে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেই এই চুক্তির গ্যারান্টি দিচ্ছেন এবং ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তদারকি করবেন। তার দূত উইটকোফ যুদ্ধবিরতির একটি খসড়া চুক্তি ইসরায়েলি সরকারের কাছে পাঠিয়েছেন এবং এখন তিনি তাদের জবাবের অপেক্ষায় রয়েছেন।
তবে পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে যখন ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল জানায়, নেতানিয়াহু সরকার এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা একটি ভিন্নধর্মী যুদ্ধবিরতি চায়, যাতে প্রাথমিকভাবে জীবিত ও মৃত অর্ধেক জিম্মি মুক্তি পায় এবং পরবর্তী আলোচনায় স্থায়ী শান্তির রূপরেখা নির্ধারণ হয়।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্টিভ উইটকোফ বলেন, ইসরায়েল স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আগে একটি মধ্যবর্তী পর্যায়ের চুক্তি চায়। তবে আমার মতে, বর্তমান প্রস্তাব হামাসের গ্রহণ করা উচিত। এটি একটি সম্ভাবনার জানালা খুলে দিচ্ছে।
হামাসের ইতিবাচক মনোভাব সত্ত্বেও ইসরায়েলের অনীহা গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনাকে আপাতত বাধাগ্রস্ত করেছে। তবে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা এখনও চলছে, আর আন্তর্জাতিক মহল এ যুদ্ধে একটি মানবিক বিরতি চায়।
মন্তব্য করুন