ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলের রাফা শহরে এক ত্রাণকেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে অন্তত ২৭ জন বেসামরিক নিহত হয়েছেন। একই ঘটনায় আরও ৯০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (০৩ জুন) অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার উদ্ধারকারীদের বরাত দিয়ে এএফপি এই তথ্য জানিয়েছে।
গাজার বেসামরিক সুরক্ষা দপ্তরের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, ‘রাফার আল আলম এলাকায় মার্কিন প্রতিষ্ঠান থেকে ত্রাণ পেতে আসা বেসামরিক মানুষদের ওপর অমানবিক হামলা চালানো হয়েছে।’
মাহমুদ আরও বলেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনী ট্যাংক ও ড্রোন ব্যবহার করে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়েছে, এতে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।’ এর আগে রোববার একই স্থানে হামলায় ৩১ জন নিহত ও ১৭৬ জন আহত হয়েছিল, যদিও ইসরায়েল সেই হামলার দায় অস্বীকার করেছে।
সাক্ষী ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, ভোরবেলা থেকে হাজারো মানুষ ত্রাণ পেতে আল আলম মোড়ের কাছে জড়ো হতে শুরু করেন। সেই সময় ইসরায়েলি সেনারা ট্যাংক ও ড্রোন থেকে গুলি চালাতে থাকে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ত্রাণকেন্দ্রের কাছে নিহতদের সংখ্যা ২৭ এবং আহতের সংখ্যা ৯০ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা বেসামরিকদের লক্ষ্য করে গুলি করেনি। তারা বলছে, কিছু সন্দেহভাজন ব্যক্তি তাদের দিকে এগিয়ে আসায় সতর্কতামূলক গুলি চালানো হয়।
তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা ও স্থানীয়রা বলেন, ইসরায়েলি সেনারা সরাসরি নিরীহ মানুষের ওপর গুলি চালিয়েছে, এতে অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। রানিয়া আল আসতাল নামে এক নারী বলেন, ‘আমি আমার স্বামীর সঙ্গে ত্রাণ নিতে গিয়েছিলাম, কিন্তু গুলির শব্দে সবাই ছুটে পালাতে বাধ্য হয়েছিল।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই ঘটনার ন্যায় বিচার ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘গাজাবাসীরা খাবারের জন্য জীবন বিপন্ন করছে, যা একদমই অগ্রহণযোগ্য।’
ত্রাণ বিতরণকারী গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) জানিয়েছে, তাদের ত্রাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে, তবে সামরিক এলাকায় অনুপ্রবেশের কারণে কিছু মানুষ আহত হয়েছে। তারা ইসরায়েলি বাহিনীর তদন্তের অপেক্ষায় রয়েছে।
গত ১৮ মার্চ গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর দীর্ঘদিন ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিয়ে আসছিল ইসরায়েল। সম্প্রতি সীমিত পরিমাণ ত্রাণ জিএইচএফের মাধ্যমে বিতরণ শুরু হলেও তা চাহিদার তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
মন্তব্য করুন