কয়েক দফা বাড়ার পর হঠাৎ স্বর্ণের দর পতন ঘটেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে সোনার দাম গত কয়েক ঘণ্টায় প্রতি গ্রামে ৪.৭৫ দিরহাম কমে ২২ ক্যারেটের জন্য ৩৭৮.২৫ দিরহামে পৌঁছেছে। তবে এটি এখনও ‘ক্রেতা-বান্ধব’ মাত্রায় নেই বলে জানিয়েছে গালফ নিউজ।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) বাজারে এমন অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যায়। এটি অনেকের জন্য আংশিক স্বস্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ, গত শুক্রবার কয়েকবার স্থানীয় দাম বাড়ে। ওই দিন ২২ ক্যারেট সোনার দাম ৩৯০ দিরহামের কাছাকাছি পৌঁছায়। ২৪ ক্যারেটের দাম এখনও ৪০০ দিরহামের উপরে। প্রতি গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ৪০৮.৫ দিরহামে।
দুবাইয়ে একজন গহনা বিক্রেতা বলেন, নিয়মিত সোনার ক্রেতাদের জন্য দাম ৩৭০ দিরহাম বা তার নিচে হলে আবারও অনুকূল মনে হবে। এর চেয়ে বেশি হলে তা একটি উচ্চ প্রিমিয়াম দাম হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে আমরা দেখেছি, গত শুক্রবারের রেকর্ড দামেও সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাসিন্দা-ক্রেতারা সোনা কিনছেন। কিছু ক্রেতাকে মোটেও দামের বিষয়ে চিন্তিত মনে হয়নি। তাদের শুধু সোনা কেনাটাই উদ্দেশ ছিল।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এটা হতে পারে যে- ক্রেতারা সোনার দামের পরবর্তী বড় ঊর্ধ্বমুখীতার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিছু ব্যবসায়ী বলছেন, বছরের শেষ নাগাদ ২২ ক্যারেটের দাম ৪০০-৪১০ দিরহামে পৌঁছাতে পারে। তাই হয়তো তারা সোনা মজুত করার পরিকল্পনা করছেন।
বাজার পরিস্থিতি আরও একটি ইঙ্গিত দেয়, সোনার ক্ষেত্রে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো বাজারে ভোক্তাদের কাছে এর আকর্ষণ সব সময় ব্যাপক। দাম যাই হোক না কেন তা সেখানকার ক্রেতাদের কাছে মুখ্য নয়।
সোমবার দুপুর থেকে বিশ্ব বাজারে সোনার দাম কমতে দেখা গেছে। বর্তমানে এটি প্রতি আউন্সে ৩,৪০০ ডলারের নিচে বিক্রি হচ্ছে। ইসরায়েল-ইরান হামলার ফলে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বলে যে উদ্বেগ ছিল তা অন্তত এই মুহূর্তে কমে গেছে।
এদিকে বাংলাদেশের বাজারে ভরিতে ২ হাজার ১৯২ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫২৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। রোববার (১৫ জুন) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর করা হয়েছে।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫২৮ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার ৮০২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৮ হাজার ১৬৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।
মন্তব্য করুন