কাতারের রাজধানী দোহার উপকণ্ঠে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনা আল উদেইদ বিমানঘাঁটিতে ইরানের ছোড়া ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্রের হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কাতার সরকার।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ হামলাকে কাতারের সার্বভৌমত্ব, আকাশসীমা এবং জাতিসংঘ সনদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে আখ্যা দিয়েছে।
সোমবার (২৩ জুন) স্থানীয় সময় বিকেলে এই হামলার পরপরই কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেন, ‘আইআরজিসি’র এই হামলা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের ওপর সরাসরি আক্রমণ, যা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। কাতার রাষ্ট্র হিসেবে এর উপযুক্ত জবাব দেওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করে।
তিনি আরও জানান, কাতারের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইরানের হামলা প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে এবং ঘাঁটিতে কোনো বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
এর আগে, ইসরায়েলি এক কর্মকর্তার বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস এবং ব্রিটিশ বিবিসি অ্যারাবিক জানায়, ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) আল উদেইদ ঘাঁটি লক্ষ্য করে ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম এটিকে ‘প্রতিশোধমূলক হামলা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
হামলার আগে থেকেই আল উদেইদ ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে হুমকির ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল বলে জানিয়েছেন এক পশ্চিমা কূটনীতিক। হামলার পরপরই নিরাপত্তার স্বার্থে কাতার সাময়িকভাবে আকাশসীমা বন্ধ করে দেয় এবং দেশটিতে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের ‘অত্যন্ত সতর্কতা’ অবলম্বনের আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।
প্রসঙ্গত, দোহার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত আল উদেইদ বিমানঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের ফরোয়ার্ড হেডকোয়ার্টার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ১৯৯৬ সালে প্রতিরক্ষা চুক্তির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত এই ঘাঁটিতে বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে, যা মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম সামরিক উপস্থিতি।
এই হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে নতুন করে উত্তেজনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য করুন