যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত আল-উদেইদ বিমানঘাঁটিতে ইরানের হামলার নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘের কাছে বিচার দিয়েছে কাতার। আন্তর্জাতিক সংস্থাটির মহাসচিবের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছে দেশটি।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ওই চিঠিতে সোমবার (২৩ জুন) রাতের হামলাকে ‘চরম বিপজ্জনক উসকানি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং এতে বলা হয়েছে, এই হামলা কাতারের ‘সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি।
বিবৃতিতে কাতার জোর দিয়ে বলেছে, জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী কাতার এর উপযুক্ত জবাব দেওয়ার অধিকার রাখে।
এরই মধ্যে দোহায় নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে কাতার সরকার।
গতকাল (সোমবার) রাতে কাতার ও ইরাকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। আকাশে আলোর ঝলকের দেখা মেলে। হামলার পর থেকে বাহরাইন, কুয়েত, সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন মার্কিন সেনারা।
কাতারে আল-উদেইদ মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার কথা স্বীকার করে যুক্তরাষ্ট্র। বিবিসির খবরে বলা হয়, মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন জানিয়েছে, আল-উদেইদ বিমানঘাঁটিতে ইরান থেকে ছোড়া স্বল্প ও মধ্যম পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছিলেন, তারা ইরান থেকে ছোড়া সব ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেন, এ হামলা কাতারের সার্বভৌমত্ব, আকাশসীমা এবং জাতিসংঘ সনদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আনসারি দাবি করেন, কাতারের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইরানের এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ব্যর্থ করে দিয়েছে। এ হামলা সফলভাবে মোকাবিলা করেছে।
তবে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে হামলার আগে কাতারকে জানানো হয়েছিল দাবি করে তেহরান।
ইরানের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা পরিষদ এক বিবৃতিতে বলা হয়, এ হামলা বন্ধুত্বপূর্ণ ও ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ কাতার বা তার সম্মানিত জনগণের জন্য কোনো হুমকি তৈরি করে না। ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান কাতারের সঙ্গে দীর্ঘদিনের উষ্ণ ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
অন্যদিকে মার্কিন ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে ইরানের হামলাকে ‘প্রতীকী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক স্টেফান ফ্রুহলিং। বিবিসিকে তিনি বলেছেন, ‘এই সতর্কতার মাধ্যমে ইরান বোঝাতে চেয়েছে যে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও বড় সংঘাতে জড়াতে চায় না।’
তথ্যসূত্র: বিবিসি
মন্তব্য করুন