‘তোমরা সবাই আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে আকড়ে ধরো এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না।’ সূরা আল ইমরানের ১০৩ নম্বর আয়াত এটি। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি প্রায়ই এই আয়াত উদ্ধৃত করে বক্তব্য দেন। তিনি বিশ্বের মুসলমানদের ঐক্যের পক্ষে জোরাল ভূমিকা রেখেছেন। যদিও অনেকে শিয়া এবং সুন্নি ইস্যুতে তার মত পার্থক্য তুলে ধরেছেন।
তবে এ বিষয়ে খামেনি স্পষ্ট করে বলেছেন, শিয়া-সুন্নি বিভেদ ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্র। ২০১০ সালে ইসলামী ঐক্য সম্মেলনে তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে মিল বেশি, ফারাক নয়। শত্রুরা চায় বিভাজন। কিন্তু মুসলমানদে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
খামেনিকে শুধু একজন রাজনীতিক বা আলেম নয় বরং মুসলিম বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা হিসেবেও তাকে বিবেচনা করা হয়। বিশেষ করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তার একক অবস্থান তাকে অনন্য একটি অবস্থানে নিয়ে গেছে।
খামেনির রাজনৈতিক উত্থান শুরু হয় ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের মাধ্যমে। তিনি ছিলেন ইমাম রুহুল্লাহ খোমেনির ঘনিষ্ঠ সহচর ও বিপ্লবের অন্যতম মুখ। বিপ্লবের পর তিনি ইরানের প্রথম আলেম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। পরে ১৯৮৯ সালে ইমাম খোমেনির মৃত্যুর পর ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দায়িত্ব নেন এবং আজও সেই পদে অধিষ্ঠিত আছেন।
খামেনি বহুবার সৌদি আরব, মিশর, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন সুন্নি দেশের আলেমদের সঙ্গে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন। ফিলিস্তিনিরা সুন্নি সত্ত্বেও তিনি তাদের প্রতিরোধকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, ‘আজ ফিলিস্তিনকে রক্ষা মানে ইসলামকে রক্ষা করা।’ ২০১৪ সালেও গাজার ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসনের সময় তিনি প্রকাশ্যে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের প্রতি সমর্থন জানান। বর্তমানেও তার অবস্থানের নড়চড় হয়নি।
সৌদি আরব ও বাহরাইনের মতো সুন্নি নেতৃত্বাধীন দেশগুলো তাকে ‘শিয়া সম্প্রসারণবাদের’ অভিযোগে অভিযুক্ত করে আসছে। তবুও খামেনি বারবার জোর দিয়ে বলেছেন, তার লক্ষ্য শিয়া আধিপত্য নয় বরং মুসলিম বিশ্বকে একত্রিত করা।
মন্তব্য করুন