সিরিয়া ও ইসরায়েল অবশেষে একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের তুরস্কে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত টম ব্যারাক শনিবার (১৯ জুলাই) সকালে এক্সে এ ঘোষণা দেন। তিনি জানান, এই চুক্তিকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করেছে এবং তুরস্ক, জর্ডানসহ সিরিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলো এটি স্বাগত জানিয়েছে।
সিরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সুয়েইদা প্রদেশে গত কয়েকদিন ধরে বেদুইন ও দ্রুজ গোষ্ঠীর মধ্যে ভয়াবহ জাতিগত সংঘর্ষ চলছে। এই সংঘর্ষে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। ইসরায়েল দাবি করে, তারা সিরিয়ার দ্রুজ সংখ্যালঘুদের রক্ষায় বিমান হামলা চালিয়েছে, যার লক্ষ্য ছিল সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি সরকারি ঘাঁটি।
বুধবার ইসরায়েল রাজধানী দামেস্কে সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে এবং সুয়েইদা অঞ্চলে সরকারি বাহিনীর ওপর বড় ধরনের বিমান হামলা চালায়। এতে অন্তত তিনজন নিহত এবং ৩৪ জন আহত হন।
ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দক্ষিণ-পশ্চিম সিরিয়ায় চলমান অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে ইসরায়েল পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার জন্য সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীকে সুয়েইদা জেলায় সীমিতভাবে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে।
এর আগে বুধবার সিরিয়ার সরকার ও দ্রুজ নেতাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক ও আরব দেশগুলোর মধ্যস্থতায় একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু চুক্তির দিনই ইসরায়েল হামলা চালায়, যার ফলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-সারা এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, দ্রুজ সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের অগ্রাধিকার। তিনি জানান, সিরিয়া যুদ্ধ চায় না, তবে যদি বাধ্য হয়, তবে প্রতিরোধে প্রস্তুত।
শুক্রবার আবারও বেদুইন ও দ্রুজ গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সিরিয়ার সরকার সুয়েইদা অঞ্চলে একটি বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করেছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সিরিয়া ও ইসরায়েলে বসবাসরত দ্রুজ সম্প্রদায়কে ভ্রাতৃপ্রতিম বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, এই জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা রক্ষায় ইসরায়েল দায়বদ্ধ।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ব্যারাক বলেন, আমরা দ্রুজ, বেদুইন ও সুন্নি সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যেন তারা অস্ত্র ত্যাগ করে এবং শান্তি ও ঐক্যের পথে একসঙ্গে আগায়।
তথ্যসূত্র : আল জাজিরা
মন্তব্য করুন