দেশের শুষ্ক ও মরুময় শহরগুলোকে সবুজে রূপ দিতে অভিনব পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সৌদি আরব। দেশটি এবার কৃত্রিম বৃষ্টিপাত বা ক্লাউড সিডিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে নতুন পানির উৎস ও বনাঞ্চল গড়ে তুলতে চায়।
প্রথম ধাপে রিয়াদ, কাসিম, হাইল, মক্কা, আল বাহা ও আসির অঞ্চলে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পরে ধীরে ধীরে পুরো রাজ্যেই এ প্রকল্প সম্প্রসারণ করা হবে। এর লক্ষ্য হলো- বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি, মরুকরণ রোধ, খরা মোকাবিলা এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ পুনর্গঠন।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা সৌদি গেজেটের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিশেষায়িত বিমান দিয়ে পরিবেশবান্ধব উপাদান মেঘে ছড়িয়ে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানো হচ্ছে। এতে মেঘের ভেতরের প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন এনে বৃষ্টিপাত দ্রুত ও কার্যকরভাবে সম্ভব হচ্ছে।
এই কর্মসূচি যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান ঘোষিত ভিশন ২০৩০-এর অংশ। গত বছর থেকেই দেশটি নিজস্ব প্রযুক্তি, উড়োজাহাজ ও জনবল দিয়ে প্রকল্পটি সম্পূর্ণ জাতীয় সক্ষমতায় বাস্তবায়ন শুরু করেছে।
ক্লাউড সিডিং কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আইমান আল বার জানান, সৌদিতে ক্লাউড সিডিং প্রথম পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। পরে ২০০৪ সালে আসির এবং ২০০৬ সালে মধ্যাঞ্চলে গবেষণা চালানো হয়। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পটির সূচনা হয় ২০২২ সালে।
তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত প্রায় ৭৫২টি ফ্লাইটে ১,৮৭৯ ঘণ্টা কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। পাশাপাশি গবেষণার জন্য ৫১টি বিশেষ ফ্লাইট সম্পন্ন হয়েছে। সর্বশেষ অভিযানটি পরিচালিত হয় চলতি আগস্টে রামাহ গভর্নরেটে, যেখানে এক ঘণ্টা ২০ মিনিটের উড্ডয়নে মেঘে পানির পরিমাণ বৃদ্ধির ইতিবাচক ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, গ্রীষ্মকালে ক্লাউড সিডিং তুলনামূলক কঠিন। কারণ এ সময় উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়ায় ঠান্ডা মেঘের সৃষ্টি কম হয়। তাই বিকল্পভাবে ক্লাউড বেস সিডিং ও ক্লাউড টপ সিডিং কৌশল ব্যবহার করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন