কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:০৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

খলিফা উমরের (রা.) সঙ্গে চুক্তিপত্রের প্রতিলিপি এরদোয়ানকে উপহার দিলেন খ্রিষ্টান পাদরি

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জেরুজালেমের গ্রীক অর্থোডক্স প্যাট্রিয়ার্ক (পাদরি) থিওফিলাস জিয়ানোপোলোস তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকে একটি চুক্তিপত্রের প্রতিলিপি উপহার দিয়েছেন। ৬৩৮ সালে মুসলিমদের জেরুজালেম বিজয়ের পর খলিফা হযরত উমরের সঙ্গে খ্রিস্টানদের যে চুক্তি হয় এটিই তারই প্রতিলিপি।

প্রতিলিপিটি ফ্রেমে বাঁধিয়ে তুরস্কে নিয়ে আসেন থিওফিলাস। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ইস্তাম্বুলের ডলমাবাহচে প্রাসাদে জিয়ানোপোলোস এবং তার প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানান এরদোয়ান। তখন তিনি এরদোয়ানকে প্রতিলিপিটি উপহার দেন।

জেরুজালেম উমরের কাছে আত্মসমর্পণের সময় বাইজেন্টাইন শাসনামলে শহরের খ্রিস্টান নেতা প্যাট্রিয়ার্ক সোফ্রোনিওসকে চুক্তিপত্রটি হস্তান্তর করেন। চুক্তিটি শহরের খ্রিস্টান জনসংখ্যা এবং তাদের পবিত্র স্থানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। যার মধ্যে রয়েছে জেরুজালেমের পবিত্র সমাধির চার্চ এবং বেথলেহেমের জন্মের ব্যাসিলিকা। এ ছাড়া খ্রিস্টানরা বিজয়ী জেরুজালেমে কী সুবিধা পাবেন, তাদের দায়িত্ব কী হবে তাও চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিজয়ের পর জেরুজালেমবাসীর দাবি অনুযায়ী হজরত ওমর (রা.) পায়ে হেঁটে জেরুজালেম শহরের দরজায় উপস্থিত হন। তাকে দেখে জেরুজালেমের পাদ্রীরা যখন বুঝতে পারে যে ইনিই খলিফা, তারা আনন্দের সাথে শহরের চাবি তাঁর কাছে হস্তাস্তর করে কারণ খলিফার এই বর্ণনাই তারা তাদের কিতাবে পেয়েছিল।

ওমর (রা.) খ্রিস্টানদের সাথে একটি নিরাপত্তা চুক্তি করেন, যা ইতিহাসে ‘আল-আহদুল উমরিয়্যাহ’ নামে পরিচিত। তাতে লেখা রয়েছে, এটি সেই নিরাপত্তার চুক্তি যা আল্লাহর বান্দা ওমর, আমিরুল মুমিনীন, জেরুজালেমের (ইলিয়ায়) অধিবাসীদের জন্য প্রদান করেছেন। তিনি তাদের নিজেদের জীবন, সম্পদ, গির্জা, ক্রুশ, অসুস্থ ও সুস্থ সকল মানুষের জন্য নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছেন। তাদের গির্জাগুলোতে কেউ বসবাস করবে না, সেগুলো ধ্বংস করা হবে না, সেগুলোর কোনো অংশ বা সীমানা কমানো হবে না, তাদের ক্রুশ ও সম্পদে কোনো হস্তক্ষেপ করা হবে না। তাদের তাদের ধর্ম পালনে বাধ্য করা হবে না, তাদের কারো কোনো ক্ষতি করা হবে না। তবে জেরুজালেমে তাদের সঙ্গে কোনো ইহুদি বসবাস করবে না। জেরুজালেমের অধিবাসীদের অন্যান্য শহরের বাসিন্দাদের মতো জিজিয়া কর দিতে হবে এবং তাদের শহর থেকে রোমানদের বের করে দিতে হবে। যারা রোমানদের সঙ্গে চলে যেতে চায়, তারা তাদের সম্পদসহ নিরাপদে যেতে পারবে এবং তাদের গির্জা ও ক্রুশ পরিত্যক্ত অবস্থায় রেখে যাবে। তারা তাদের নিরাপদ স্থানে পৌঁছানো পর্যন্ত নিরাপত্তা পাবে। যারা জেরুজালেমে থাকতে চায়, তারা এখানেই থাকতে পারবে, তবে তাদের ওপরও জিজিয়া কর পরিশোধের দায়িত্ব থাকবে। যারা রোমানদের সঙ্গে যেতে চায়, তারা যেতে পারবে এবং যারা নিজ বাড়িতে ফিরে যেতে চায়, তারা ফিরে যেতে পারবে। এ চুক্তিনামার সব কিছু আল্লাহ, তার রাসুল, খলিফা এবং মুসলমানদের অঙ্গীকার, যদি তারা তাদের ওপর আরোপিত জিজিয়া পরিশোধ করে।

তৎকালীন খ্রিস্টান নেতা প্যাট্রিয়ার্ক সোফ্রোনিওস হজরত ওমর (রা.) মহানভবতায় বিস্মিত হন। তিনি হজরতের বশ্যতা স্বীকার করে রাষ্ট্র পরিচালনায় সহযোগিতাপূর্ণ আচরণের প্রতিশ্রুতি দেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ইরান ইস্যুতে ট্রাম্পের নতুন পদক্ষেপ

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি গুতেরেসের

জুমার নামাজের পর হবে মারামারি, মাইকিং করলেন বড় ভাই

শিক্ষকের গায়ে আগুন ধরিয়ে টাকা ছিনতাই

ভারতের দুই সাবেক তারকা ক্রিকেটারের সম্পত্তি জব্দ

শান্তি আলোচনার মধ্যেই আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে সংঘর্ষ

জাহানারার অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিসিবির তদন্ত কমিটি গঠন

ডি ককের সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রোটিয়াদের দাপুটে জয়

এবার ঢাকার হয়ে বিপিএল মাতাবেন তাসকিন

নোট অব ডিসেন্টসহ ঐকমত্য হওয়া জুলাই সনদের আইনানুগ বাস্তবায়ন চায় বিএনপি

১০

জাহানারার বিস্ফোরক অভিযোগে তদন্তে নামছে বিসিবি

১১

ঐকমত্য কমিশনের ব্যয় সংক্রান্ত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ

১২

মির্জা ফখরুলকে ফোন করে আলোচনার আহ্বান জামায়াতে ইসলামীর

১৩

আইডিইবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও গণপ্রকৌশল দিবসের সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা

১৪

মারা গেছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী

১৫

চার দশক পর মার্কিন কংগ্রেস থেকে অবসর নিলেন ন্যান্সি পেলোসি

১৬

মাদক ও চাঁদাবাজমুক্ত ঢাকা-১১ গড়ার অঙ্গীকার ড. কাইয়ুমের

১৭

গাজায় আরও ফিলিস্তিনি নিহত, লেবাননেও ইসরায়েলি হামলা

১৮

ক্রান্তিকালীন একমাত্র বিএনপিই দেশের হাল ধরেছে : মোস্তফা জামান

১৯

জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট করতে হবে : জামায়াত আমির

২০
X