জীবন বাঁচাতে কতো অভিজ্ঞতাই না হয় মানুষের। সব অভিজ্ঞতাই হয়তো দেখে ফেলেছেন গাজাবাসী। ইসরায়েলি তাণ্ডব থেকে রক্ষা পেতে মুরগির খাঁচায় ঠাই হয়েছে বেশ কয়কটি পরিবারের। তীব্র গন্ধ এখন সয়ে গেছে নাকে। দিব্বি মানিয়ে নিয়েছেন তারা।
সারি সারি লোহার খাঁচায় শুয়ে-বসে কাটছে এই ফিলিস্তিনিদের জীবন। এ দফায় আপাতত প্রাণ বাঁচলেও মিলছে না প্রয়োজনীয় খাবার। ভুক্তভোগী এক ফিলিস্তিনি বলেন, আমাদের এখানে এক প্রকার জোর করেই রাখা হয়েছে। তেমন কোন খাবার বা ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে না। চালের টিন ছিদ্র থাকায় বৃষ্টির পানিও পড়ে গায়ে। ঘুমতে হয় মুরগির খাঁচায়। এই হচ্ছে আমাদের জীবন।
তিনি বলেন, জানি না এখানে আর কতদিন থাকতে হবে? আদৌ কি কোন দিন স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবো কিনা তাও জানা নেই। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুণ।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, এমন জীবন থেকে মুক্তি চান তারা। দ্রুত ফিরতে চান আপন ঠিকানায়। শুধু থাকার সমস্যাই নয়, গাজায় দেখা দিয়েছে তীব্র পানি সংকট। কোথাও তেমন বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নেই।
সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় পানি সংকটও ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে সেখানকার রাস্তায় জমে থাকা পানি পান করছে শিশুরা। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। সেখানে গাজার এক শিশুকে রাস্তায় জমে থাকা পানি পান করতে দেখা গেছে।
এর আগে গত মাসে জাতিসংঘ জানায়, গাজার ৮০ শতাংশ মানুষই ক্ষুধার্ত। তাদের মধ্যে চার ভাগের একভাগ মানুষ অনাহারে রয়েছেন। দেশটির উপকূলীয় অঞ্চলে ২৩ লাখ মানুষের বসবাস রয়েছে। যারা দুর্ভিক্ষ ও বিপর্যয়কর ক্ষুধার মুখোমুখি অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, সেখানে পাঁচ বছরের নিচে তিন লাখ ৩৫ হাজার শিশু রয়েছে, যারা অপুষ্টিতে ভুগছে। উপত্যাকাজুড়ে ক্ষুধার্তদের সংখ্যা বাড়তে থাকায় সেখানে পুরো একটি জেনারেশন অপুষ্টির ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে বলেও শঙ্কা করা হয়। বিভিন্ন মানবিক সংস্থা গাজায় সুপেয় পানি ও স্যানিটেশন সমস্যা নিয়ে বারবার উদ্বেগ জানিয়েছে। ইসরায়েলি হামলার কারণে সেখানকার অপুষ্টিতে ভোগা হাজার হাজার মানুষের মধ্যে রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।
মন্তব্য করুন