আটলান্টিক মহাসাগরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে ডুবোযান টাইটান বিস্ফোরণের শিকার হয় বলে জানায় মার্কিন কোস্টগার্ড। সাগর থেকেই উদ্ধার করা হয় এর ধ্বংসাবশেষ। এরপরই ডুবোযানটি উদ্ধারের প্রচেষ্টার চেয়ে বিশেষজ্ঞদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের বিষয়টি। সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
এর আগে মার্কিন কোস্টগার্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মাউগার বলছেন, যে ধ্বংসাবশেষগুলো পাওয়া গেছে, সেগুলো মারাত্মক বিস্ফোরণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
বিবিসি বলছে, বিস্ফোরণের বিষয়টি উঠে আসার কারণ হলো—ডুবোযানটির যে অংশগুলো পাওয়া গেছে, এর মধ্যে টাইটানের পেছনের অংশ এবং এর অবতরণের একটি ফ্রেম রয়েছে। এর মাধ্যমে বোঝা যায়, ডুবোযানটি আলাদা হয়ে গিয়েছিল।
ব্রিটেনের রয়্যাল নেভির সাবেক সাবমেরিন ক্যাপ্টেন রায়ান রামসে বলছেন, ‘কেন এটি ঘটেছে এবং এসব ঘটনা প্রতিরোধে কী করা যেতে পারে, এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য ধ্বংসাবশেষের প্রতিটি টুকরো সংগ্রহ করবে কর্তৃপক্ষ।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডুবোযানের কোনো ব্ল্যাকবক্স নেই। তাই সেটির শেষ গতিবিধি জানা যাবে না। তবে তদন্তের প্রক্রিয়াটি বিমান দুর্ঘটনার পর অনুসন্ধানের মতোই।’
রায়ান রামসে বলেন, ‘একবার টুকরোগুলো পাওয়া গেলে কার্বন ফাইবার পরীক্ষা করা হবে। শেষ মুহূর্তে টাইটানের কী হয়েছিল, এ পরীক্ষা তা বুঝতে সাহায্য করবে। কার্বন ফাইবার ফিলামেন্ট পরীক্ষা করার জন্য প্রতিটি টুকরো মাইক্রোস্কোপে নিবিড়ভাবে পরীক্ষা করা হবে। এরপর কাঠামোগত কোনো সমস্যা ছিল কিনা, এর উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবেন তদন্তকারীরা।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি ত্রুটি থেকে থাকে, তবে প্রশ্ন হলো এটি সঠিক পরীক্ষার অভাবে হয়েছে কিনা।
১০০ বছরের বেশি সময় আগে ১৯১২ সালে আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে যায় সেই সময়ের সর্ববৃহৎ জাহাজ টাইটানিক। জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ দেখতে গত রোববার পর্যটকদের নিয়ে ডুব দিয়েছিল ডুবোযান টাইটান। এটি পরিচালনা করে পর্যটন সংস্থা ওশানগেট।
আটলান্টিকের গভীরে ডুব দেওয়ার পৌনে দুই ঘণ্টার মাথায় টাইটানের সঙ্গে পানির ওপরে থাকা নিয়ন্ত্রক জাহাজ ‘পোলার প্রিন্সের’ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার পর থেকে চলছিল টাইটানের উদ্ধার অভিযান।
চার দিনের শ্বাসরুদ্ধকর তল্লাশি শেষে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড জানায়, ভয়ংকর অন্তর্মুখী বিস্ফোরণে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে টাইটান। আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষের পাশেই পাওয়া গেছে টাইটানের ধ্বংসস্তূপ।
মন্তব্য করুন