এলাকায় একের পর এক ছিঁচকে চুরির ঘটনা ঘটছে। আজ একজনের অন্তর্বাস নেই তো, কাল আরেকজনের মোজা নেই। টুর্নামেন্টে অংশ নিতে কেউ হয়তো তার শখের জার্সিটা আয়রন করে গুছিয়ে রেখেছেন, সকালে উঠে দেখেন সেটিও নেই। দিনের পর দিন এমন ঘটনা, অথচ চোরকে শনাক্তে কোনো আলামতও পাওয়া যাচ্ছে না।
বাসিন্দারা যখন চরম উৎকণ্ঠায় তখনই চোরের হদিস মেলে। আর তাতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার বদলে চোরের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে পড়েন গোটা কমিউনিটির লোকজন।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড শহরের মাইরাঙ্গি বে এলাকায় এক পরিবারের পোষা বিড়াল ওই চুরির ঘটনা ঘটাচ্ছে। ১৫ মাস বয়সী বিড়ালটির যখন কোনো ইঁদুর বা পাখি শিকার করে বাসায় নিয়ে আসার কথা তখন সে মানুষের বাসায় চুরি করে বেড়াচ্ছে। আর তা এনে জমা করছে মনিবের বাসায়।
এলাকায় বিড়ালটি এখন সবার চেনা। অনেকটা সেলিব্রেটির মর্যাদা পাচ্ছে সে। আদর করে এলাকাবাসী তার নাম দিয়েছে লিওনার্দো দ্য পিঞ্চি।
লিওনার্দো দ্য পিঞ্চির মালিক হেলেন নর্থ বলেন, একবার সে দারুণ ক্যাশমারের সোয়েটার নিয়ে আসে। সেটি খুব সুন্দর ছিল। ভাবলাম, ভালোই তো, রেখে দিব নাকি। (হাসতে লাগলেন হেলেন)।
তবে পিঞ্চির আগ্রহ সিল্কের বক্সার আন্ডারওয়্যারের দিকে। এমন কিছু পেলেই সে চুরি করে বাসায় নিয়ে আসে।
হেলেন জানান, প্রথমে তিনি বিষয়টি পাত্তা দেননি। কিন্তু নিয়মিত এমন ঘটনা ঘটায় তিনি চুরির মালামাল ফেরত দিতে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলেন। তাতে ছবিসহ আপলোড দিয়ে বলতে থাকেন, ‘এ অন্তর্বাসটি কি আপনার?’
লোকজন মালিকের পোস্ট দেখে বাসায় এসে নিজেদের মালামাল ফেরত নিতে শুরু করেন। কিন্তু পিঞ্চির রাজত্বের এলাকা বাড়তে থাকে। সে বহু দূরের বাড়ি বা দোকান থেকেও এটা-সেটা নিয়ে আসতে শুরু করে। পরে হেলেন নিজের প্রোফাইলে দুঃখ প্রকাশ করে ছবিসহ পোস্ট দেন। পোস্টটি আরও মানুষের কাছে পৌঁছায়। তারা এসে নিজেদের জিনিসপত্র নিয়ে যেতে থাকেন।
তবে পিঞ্চির এমন কাজে ক্ষোভের বদলে তার প্রতি জনসাধারণের ভালোবাসা বেড়ে যায়। অনেকে বলতে থাকেন, কেন সে এখনো তাদের বাড়িতে এলো না।
এদিকে কেউ কেউ পিঞ্চির চুরি ঠেকাতে বিভিন্ন পরামর্শও দিচ্ছেন। যেমন, তাকে বাড়িতেই পোশাকসহ নানা পণ্য খেলার জন্য দেওয়া। কিন্তু এতে কোনো কাজ হলো না।
একবার পরামর্শ এলো, পিঞ্চির সঙ্গী এনে দেওয়া হোক। সে তার সঙ্গে সময় কাটালে চুরির নেশা ভুলে যাবে। কিন্তু হেলেন চিন্তিত হয়ে বলেন, পিঞ্চি যদি নতুন বিড়ালটিকেও চুরি শিখিয়ে ফেলে?
মন্তব্য করুন