

বরিশাল সদর উপজেলার চন্দ্রমোহন ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বাড়ি থেকে ১৭৫ কেজি চোরাই সাবমেরিন ক্যাবল জব্দ করা হয়েছে। এ সময় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) তাকে আদালতের মাধ্যকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে, মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ওই এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধ শাহজাহান সিকদারের বাড়ি থেকে সাত বস্তা তামার সাবমেরিন ক্যাবল উদ্ধার করে বন্দর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় দুজনকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা হয়েছে। পল্লী বিদ্যুতের একজন এজিএম বাদী হয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দর থানায় মামলাটি করেন।
বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুই আসামির মধ্যে শাহজাহান সিকদার নামের একজন গ্রেপ্তার রয়েছে। তাকে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) আদালতের মাধ্যকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া অপর আসামি পান্না সিকদার পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
পলাতক পান্না সিকদার সদর উপজেলার চন্দ্রমোহন ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার চুন্নু সিকদারের ছোট ভাই।
স্থানীয় বাসিন্দা জালাল কাজী জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তাদের এই এলাকায় নদী এবং তীরে মাটির নিচে থাকা সাবমেরিন ক্যাবল চুরি হচ্ছে। এর আগেও একবার চোর ধরা হয়েছিল। তখন ৪০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে রক্ষা পান একই বাড়ির অভিযুক্তরা। এরপর মঙ্গলবার আবার সাত বস্তা সাবমেরিন ক্যাবল উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং জমির মালিক জানান, গভীর রাতে এস্কেভেটর দিয়ে মাটি খুঁড়ে সাবমেরিন ক্যাবল উত্তোলন করা হয়। ওই রাতেই ক্যাবলগুলো কেটে খণ্ড খণ্ড করে বস্তায় ভরে নিয়ে যায়। যেই বাড়ি থেকে তারগুলো উদ্ধার করা হয়েছে সেই বাড়িতে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার এবং চৌকিদারের বাড়ি। অথচ সেই বাড়িতে কীভাবে মূল্যবান চোরাই ক্যাবল এলো এ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন তারা।
স্থানীয় ড্রেজার এবং এস্কেভেটর ব্যবসায়ী কাউসার হোসেন টুটুল জানান, সাবমেরিন ক্যাবল এস্কেভেটর ব্যবহার করে মাটির নিচ থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। যেই এস্কেভেটর দিয়ে ক্যাবল কাটা এবং চুরি করা হয়েছে সেটার মালিক অন্য কেউ। তাছাড়া যেই বাড়ি থেকে চোরাই ক্যাবল উদ্ধার হয়েছে চোরও সেই বাড়িতেই থাকতে পারে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
নিজ ঘর থেকে চোরাই ক্যাবল উদ্ধারের বিষয়ে বাড়ির মালিক বৃদ্ধ শাহজাহান সিকদারের মেয়ে আশা মণি জানান, দুদিন আগে রাত ৪টার দিকে সাতটি বস্তা তাদের বাড়িতে রেখে যান মেম্বারের ভাই পান্নু সিকদার। তাকে রাখতে নিষেধ করেছিলাম, কিন্তু শোনেনি। সকালেই নিয়ে যাবে বলে ঘরে তোশকের মধ্যে এগুলো লুকিয়ে রাখে। পুলিশ আসার পর দেখি চোরাই ক্যাবল। যিনি এগুলো রেখে গেছেন তাকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটনের বন্দর থানার ওসি ইসমাইল হোসেন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ১৭৫ কেজি সাবমেরিন ক্যাবল উদ্ধার করা হয়। এ সময় ঘরের মালিক শাহজাহান সিকদারকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দায়ের হওয়া মামলায় দুজনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে আর কেউ জড়িত থাকলে তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
মন্তব্য করুন