বৃহস্পতিবার ভয়াবহ আরেকটি ঘটনার সাক্ষী হলো বাংলাদেশ। এ দিন রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডে একটি বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৪৪ জন নিহত হয়েছেন। বর্তমানে ঘটনাটি টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে। এমনকি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও স্থান পেয়েছে খবরটি।
শুক্রবার (১ মার্চ) দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট, ভয়েস অব আমেরিকা, এবিসি নিউজ, দ্য ন্যাশনাল, স্কাই নিউজ, সিবিএস নিউজ, দ্য গার্ডিয়ান, আরব নিউজ, নিউইয়র্ক টাইমস, এবিপি নিউজ, আউটলুক ইন্ডিয়া, দ্য হিন্দু, টাইমস অব ইন্ডিয়া, রয়টার্স, এনডিটিভি, ডয়েচে ভেলে, নিউইয়র্ক পোস্ট, গালফ নিউজ এবং দ্য সানসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।
বিবিসির প্রতিবেদনের শিরোনামে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ অগ্নিকাণ্ড: ঢাকা ভবনে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৪৩ জন নিহত হয়েছেন’। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বাংলাদেশের একটি বহুতল ভবনে আগুন লেগে অন্তত ৪৩ জন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, রাজধানী ঢাকায় বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ১০টার দিকে একটি রেস্তোরাঁয় আগুনের সূত্রপাত হয়।
ভয়েস অব আমেরিকার প্রতিবেদনে ‘বাংলাদেশে রেস্টুরেন্টে আগুন লেগে ৪০ জনের বেশি নিহত’ শিরোনাম করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার একটি সাততলা ভবনে আগুন লেগে কমপক্ষে ৪৩ জন নিহত এবং কয়েক ডজন আহত হয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পার্শ্ববর্তী একটি বার্ন হাসপাতাল পরিদর্শন করার পর এএফপিকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আগুনে ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।’
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় ভবনে আগুন লেগে বেশ কয়েকজন নিহত। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন জানিয়েছেন, আগুন লেগে ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও পার্শ্ববর্তী একটি বার্ন ইউনিট পরিদর্শনের পর তিনি এ তথ্য জানান।
সামন্ত লাল জানান, আহত ২২ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর।
আরব নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানীকে আগুন লেগে নিহত ৪১। এতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বরাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানীতে একটি ছয়তলা শপিং মলে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৪৩ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঢাকার একটি ভবনে আগুন লাগে। শুক্রবার ভোরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জীবিতদের উদ্ধার করেছে এবং মৃতদেহ বের করে এনেছে। এতে অন্তত ৪৩ জন মারা গেছেন এবং অন্তত ২২ জনকে চিকিৎসা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত ‘কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট’ ভবনে আগুন লাগার সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস।
জানা গেছে, বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনটি সাততলা। এর নিচ থেকে ওপর পর্যন্ত পুরোটাই বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে নিচতলায় একাধিক কাপড়ের দোকান ও বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস পণ্যের যন্ত্রাংশ বিক্রি হয়। দ্বিতীয় তলা থেকে শুরু করে ওপরের দিকে কাচ্চি ভাই, কেএফসি ও পিৎজা ইনসহ বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁ রয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, আটকেপড়াদের অনেকে রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছিলেন। তারাই মূলত সেখানে আটকা পড়েন। এই অবস্থায় ভবনের তিনতলা এবং সাততলায় আটকেপড়া সবাই উদ্ধারের আকুতি জানাতে থাকেন।
এদিকে রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল একটি ভবনে আগুনের ঘটনায় অন্তত ৪৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন ৪৩ জনের মৃত্যুর তথ্য জানান। আর পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের জানান, এই অগ্নিকাণ্ডে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে আরও একজন মারা গেছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমি সংবাদ পেয়ে আমি দ্রুত চলে এসেছি। প্রধানমন্ত্রী আমাকে দ্রুত আসতে বললেন। এখানে এসে যা দেখলাম তা ভয়াবহ অবস্থা। বার্ন ইনস্টিটিউটে এখন পর্যন্ত ১০ জন মারা গেছেন। অপর দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৩ জন মারা গেছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, যারা এখন পর্যন্ত বেঁচে আছেন। তাদের বেশিরভাগের শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। যারা বেঁচে আছে তাদের বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছেন। বাইরে কেউ আছে কি না এখনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ঢামেক ১৪ জন ও বার্নে আহতের সংখ্যা ৮ জন চিকিৎসাধীন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সবাইকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন