পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মনে করেন, সম্প্রতি কাশ্মীরে ভারতীয় নিপীড়ন বেড়েছে। এ কারণেই স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা কাশ্মীরিদের মধ্যে আরও জোরালো হচ্ছে। রাওয়ালপিন্ডির আদিয়াল জেলে আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপকালে খান এ কথা বলেন। পরে তার এক্স অ্যাকাউন্টে তা শেয়ার করা হয়।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে অন্য একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিওটিভি নিউজ।
ইমরান খান মন্তব্য করেন, দেশের মানুষের মধ্যে কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য থাকলেও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পাকিস্তানের প্রতি আগ্রাসী মনোভাব ও যুদ্ধপ্ররোচনার বিরুদ্ধে তারা একতাবদ্ধ।
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা কারাবন্দি নেতা বলেন, ‘আমরা এই অবৈধ শাসনকে (শাহবাজ শরিফের সরকার) অস্বীকার করি। তবুও এক পাকিস্তানি জাতি হিসেবে আমরা দৃঢ়ভাবে ঐক্যবদ্ধ। মোদির যুদ্ধ-উসকানি ও তার বিপজ্জনক পরিকল্পনা এ অঞ্চলের শান্তিকে বিঘ্নিত করছে। আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।’
ভারতীয় অবৈধভাবে দখলকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের (আইআইওজেকে) পেহেলগামে পর্যটকদের উপর সাম্প্রতিক হামলার প্রেক্ষাপটে এই বক্তব্য এসেছে। ওই ২৬ জন পর্যটক প্রাণ হারান। এ ঘটনার পর নয়াদিল্লি ইসলামাবাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রায় ছিন্নের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। মোদি এই হামলার জন্য আন্তঃসীমান্ত সংযোগের অভিযোগ তুলে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করলে পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাকর হয়।
ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও ইসলামাবাদ এই অভিযোগ কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। এটিকে “ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন” বলে অভিহিত করেছে ইসলামাবাদ। সত্য উদঘাটনে একটি নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ কমিশনের মাধ্যমে স্বচ্ছ ও স্বাধীন তদন্তেরও প্রস্তাব দেয় পাকিস্তান ।
উত্তেজনার বিষয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করে ইমরান খান পেহেলগাম ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, তদন্ত ও আত্মপর্যালোচনার পরিবর্তে মোদি সরকার পাকিস্তানের উপর দোষারোপ করছে। পুলওয়ামার ফলস ফ্ল্যাগের ঘটনায় আমরা ভারতকে পূর্ণ সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দিতে পারেনি। ২০১৯ সালে আমি যা বলেছিলাম, পেহেলগাম ঘটনার পর তাই ঘটছে।
তিনি আরও বলেন, তদন্তের পরিবর্তে মোদি সরকার পাকিস্তানকে দোষী সাব্যস্ত করছে।
কাশ্মীরিদের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে খান জানান, তিনি সবসময় জাতিসংঘের রেজুলেশন অনুযায়ী কাশ্মীরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারে গুরুত্ব দেবেন। তিনি বলেন, আমি বারবার বলে আসছি- আরএসএস আদর্শে পরিচালিত ভারত শুধু এ অঞ্চলের জন্য নয়, এর বাইরেও হুমকি। ৩৭০ ধারা বাতিলের পর কাশ্মীরে ভারতীয় নিপীড়ন বেড়েছে, যা কাশ্মীরিদের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে আরও জোরালো করেছে।
মন্তব্য করুন