আকাশে সক্ষমতা অর্জনের আরেক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। দেশটির বিমানবাহিনীকে (পিএএফ) অপ্রতিরোধ্য ও অত্যাধুনিক এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল সরবরাহের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যাকে দুই দেশের মধ্যে পুনরুজ্জীবিত সামরিক সহযোগিতার লক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। খবর সামা টিভির।
এআইএম-১২০ সিরিজের এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া সম্ভব এবং এটি অনেক দূর পর্যন্ত পাইলটের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে সক্ষম। এটি বিয়ন্ড ভিজ্যুয়াল রেঞ্জ বা বিভিআর সক্রিয় রাডার ব্যবহার করে নিখুঁতভাবে লক্ষ্যবস্তুকে ধ্বংস করে।
ওয়াশিংটনের প্রকাশিত সরকারি নথি অনুযায়ী, এই চুক্তির আওতায় ২০৩০ সালের মধ্যে পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি সর্বাধুনিক এআইএম-১২০ডি-৩ অ্যাডভান্সড মিডিয়াম রেঞ্জ মিসাইল ক্ষেপণাস্ত্র পাবে। এটি উন্নত মধ্যপাল্লার এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল সিরিজের সর্বশেষ সংস্করণ।
২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের এই চুক্তিটি রেথিয়ন কোম্পানিকে দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান, তুরস্ক এবং মার্কিন মিত্র দেশগুলোও এএমআরএএএম’এস (AMRAAMs) উৎপাদন করবে, যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর (বর্তমানে ‘ডিপার্টমেন্ট অব ওয়্যার’ নামে পুনর্গঠিত) নিশ্চিত করেছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে, এটি দুই দেশের সামরিক সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত হওয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হচ্ছে এটি।
এআইএম-১২০ডি-৩ অ্যাডভান্সড মিডিয়াম রেঞ্জ মিসাইল হলো এএমআরএএএম পরিবারের সর্বশেষ প্রজন্মের ক্ষেপণাস্ত্র, যা বিয়ন্ড ভিজ্যুয়াল রেঞ্জ (বিভিআর) যুদ্ধের জন্য নকশা করা হয়েছে। এটি শত্রুর যুদ্ধবিমানের পাশাপাশি ছুটে আসা ক্ষেপণাস্ত্রও ধ্বংস করতে সক্ষম। আগের সব সংস্করণের চেয়ে এটি অনেক বেশি নির্ভুলভাবে অনেক দূরত্বের বস্তুতে আঘাত হানতে পারবে।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নতুন মিসাইল পাকিস্তানের এফ-১৬ বহরের আঘাত হানার ক্ষমতা ও আকাশ প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বহুগুণে বাড়াবে।
এটি বর্তমানে ব্যবহৃত এআইএম-১২০সি ৫ সংস্করণকে প্রতিস্থাপন করবে। এসব পাকিস্তান ২০১০ সালে কেনা এফ-১৬ ব্লক ৫২ যুদ্ধবিমানগুলোর সঙ্গে পেয়েছিল।
বিশ্লেষকদের ভাষায়, এআইএম-১২০ডি-৩ অ্যাডভান্সড মিডিয়াম রেঞ্জ মিসাইল পাকিস্তান বিমানবাহিনীকে দূরপাল্লার আকাশযুদ্ধে নির্ভুলতা অর্জন ও ব্যাপক পরিসরে নতুন মাত্রা দেবে। এটি অপ্রতিরোধ হয়ে উঠার দাপে এক গুরুত্বপূর্ণ আধুনিকায়ন ধাপ।’
পাকিস্তান কয়েক বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এই ক্ষেপণাস্ত্রের আপডেট সংস্করণের অনুরোধ জানিয়ে আসছিল, যাতে তাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখা যায়।
এই চুক্তি এমন সময়ে এসেছে, যখন গত জুলাইয়ে পাকিস্তানের বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল জাহির আহমেদ বাবর সিদ্দিকী ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রতিরক্ষা ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন।
সূত্র : সামা টিভি
মন্তব্য করুন