

আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন সরকারকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করার হুমকি দিয়েছে পাকিস্তান। সীমান্ত সংঘাত বন্ধে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে আলোচনা শুরু করে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের প্রতিনিধিরা। কিন্তু আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় বেজায় ক্ষেপেছে ইসলামাবাদ।
দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীনদের সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন করতে তাদের অতি সামান্য সামরিক শক্তিই ব্যয় করতে হবে। এক্স পোস্টে তিনি আরও বলেন, তাদের আবারও গুহায় যেতে বাধ্য করা হবে।
২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন মদদপুষ্ট গানি সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলে নেয় বর্তমান শাসকগোষ্ঠী। এরপর থেকে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে। ইসলামাবাদের অভিযোগ তাদের দেশে নিষিদ্ধ একটি গোষ্ঠীর নেতা ও সদস্যদের আশ্রয়-প্রশ্রয় এবং প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে আফগান সরকার।
এর জের ধরে গত ৯ অক্টোবর কাবুলে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান। এ হামলার প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তানের সীমান্তে পাল্টা হামলা শুরু করে আফগান সেনাবাহিনী। পরে দুই দেশ বড় ধরনের সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য আলোচনায় রাজি হয়।
গত ১৯ অক্টোবর দোহায় কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির উদ্দেশ্যে আলোচনায় বসে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। পরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে গত ২৫ অক্টোবর দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শুরু হলে তাতে পাল্টাপাল্টি অভিযোগে জড়িয়ে পড়ে দুই দেশের প্রতিনিধিরা। এতে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির আলোচনা ভেস্তে যায়।
এদিকে আফগান বাহিনী এমন এক সময় পাকিস্তানে হামলা চালায় যখন তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুক্তাকি ভারত সফরে ছিলেন। ফলে সীমান্তে হামলার পেছনে নয়াদিল্লির হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পাকিস্তান। প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, আফগানিস্তানকে হাতিয়ার বানিয়ে ভারত সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে। তিনি বলেন, কাবুলে যারা রশি টানছে এবং পুতুলের নাটক মঞ্চস্থ করছে তারা দিল্লি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, কাবুল যদি ইসলামাবাদের ওপর আক্রমণ করে, তবে তাদের বিরুদ্ধে ৫০ গুণ শক্তিতে জবাব দেওয়া হবে।
পাকিস্তানের একটি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, ইস্তাম্বুল বৈঠকে আফগান প্রতিনিধিদল পাকিস্তানে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনটির বিরুদ্ধে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে রাজি ছিল না। এ নিয়েই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ বাক্যবিনিময় হয় এবং এক পর্যায়ে বৈঠক ভেঙে যায়।
মন্তব্য করুন