দিনকে দিন যেন আরও অশান্ত হয়ে উঠছে বিশ্ব। ইউরোপ থেকে মধ্যপ্রাচ্য হয়ে এবার এশিয়াতেও ছড়িয়ে পড়ছে যুদ্ধের দামামা। ইরান এবং পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি হামলার কারণে তৈরি হয়েছে রীতিমতো যুদ্ধের আবহ। একদিকে চলছে- ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত, অন্যদিকে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলে তাণ্ডব। এর মধ্যে নতুন করে ইরান-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে বলেও শঙ্কা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে বেলুচি গোষ্ঠী জইশ আল আদলের দুটি ঘাঁটিতে হামলা চালায় তেহরান। এর জবাব দিতে অবশ্য দেরি করেনি পাকিস্তান। কয়েক ঘণ্টার মাথায় হামলা চালিয়ে বসে ইরান সীমান্তে। পাকিস্তান দাবি করে তারাও ইরানের অভ্যন্তরে বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশই যেন উত্তপ্ত বারুদ হয়ে আছে। পান থেকে চুন খসলেই লেগে যেতে পারে ভয়াবহ যুদ্ধ।
পাকিস্তান যে হামলা চালিয়েছে তা নিয়ে কথা না বললেও ইরানের হামলার তীব্র সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন বলছে, কোনো রাখঢাক না মেনে ইরাক-সিরিয়া এবং পাকিস্তানের ওপর হামলা চালিয়েছে ইরান।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি বলছে, ইরাক ও সিরিয়ায় বিভিন্ন স্থাপনায় ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস বা আইআরজিসি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর একদিন পর এই আক্রমণের ঘটনা ঘটল।
পাকিস্তান বলছে, সন্ত্রাসবাদবিরোধী একতরফা পদক্ষেপ আঞ্চলিক শান্তির জন্য হুমকি। ইসলামাবাদকে কোনো ধরনের তথ্য না দিয়ে এমন হামলা অপরাধের শামিল বলেও মনে করে পাক সরকার।
পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো বলছে, জইশ আল আদল নামের এই জঙ্গি গোষ্ঠীটি এর আগে পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় ইরানি নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর বেশ কয়েক দফায় হামলা চালায়। তেহরানের দাবি, তারা কোনোভাবেই বড় ধরনের সংঘাত চায় না। তবে তাদের দেশের ওপর কোনো ধরনের অপতৎপরতা সহ্য করবে না বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
তথ্য বলছে, ইরানের সঙ্গে সাড়ে ৯০০ কিলোমিটারের বেশি সীমান্ত রয়েছে পাকিস্তানের। পাকিস্তান ও ইরান সীমান্তবর্তী অঞ্চলটিতে কয়েক দশক ধরে সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধ করেছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। যার মধ্যে রয়েছে জইশ আল-আদল। সেই সংঘাতের জেরেই পাল্টাপাল্টি হামলার শুরুর ঘটনা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন