

ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে নতুন সামরিক মহড়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোতে রোববার থেকে নতুন পাঁচ দিনের সামরিক মহড়া চালাতে যাচ্ছে। ক্যারিবীয় এই দ্বীপরাষ্ট্রের সরকার এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র একটি গাইডেড-মিসাইল ডেস্ট্রয়ার ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোতে পাঠায়। এ ঘটনাকে ভেনিজুয়েলা ‘সামরিক উসকানি’ বলে আখ্যা দেয়। বৃহস্পতিবার দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে জানান, যুক্তরাষ্ট্র তাদের সামরিক কার্যক্রম তীব্র করতে যাচ্ছে। ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো ভেনিজুয়েলার উপকূল থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরে অবস্থিত হওয়ায় এ মহড়া আন্তর্জাতিকভাবে নজর কেড়েছে।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শন সোবার্স শুক্রবার বলেন, এই সামরিক মহড়া যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সামরিক অভিযান—বিশেষ করে ভেনিজুয়েলায়—শুরুর প্রস্তুতি নয়।
ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর প্রধানমন্ত্রী কামলা পারসাদ-বিসেসর বরাবরই যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতিকে সমর্থন করে আসছেন। তিনি ভেনিজুয়েলার সমাজতান্ত্রিক নেতা নিকোলাস মাদুরোর সঙ্গে বহুবার দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন।
সিএনএন জানিয়েছে, মহড়ায় যুক্তরাষ্ট্রের মেরিন কর্পসের ২২তম মেরিন এক্সপেডিশনারি ইউনিট অংশ নেবে। ওয়াশিংটন বলছে, তাদের উদ্দেশ্য ক্যারিবীয় অঞ্চলে ‘মাদক পাচার দমন’ অভিযানকে আরও শক্তিশালী করা।
ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর সরকার জানায়, এ মহড়ার মাধ্যমে দুই দেশের সৈন্যরা একে অপরের কৌশল, ট্যাকটিক্স ও অপারেশনাল টেকনিক সম্পর্কে পরিচিত হবে। পাশাপাশি দেশটির বাহিনীকে যুক্তরাষ্ট্র মাদক-সংক্রান্ত অপরাধ ও গ্যাং সহিংসতার মতো অভ্যন্তরীণ সমস্যার মোকাবিলায় প্রশিক্ষণ দেবে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় অঞ্চলে তাদের সামরিক উপস্থিতি জোরদার করেছে এবং তাদের সবচেয়ে বড় যুদ্ধজাহাজ সেখানে মোতায়েন করেছে। ওয়াশিংটন যদিও দাবি করছে তাদের মোতায়েন ‘মাদকবিরোধী অভিযানের’ জন্য, তবে বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন—এত বড় সামরিক শক্তি কেন প্রয়োজন। তাদের মতে, এই উপস্থিতি ১৯৮৯ সালে পানামা আক্রমণের পর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যারিবীয় অঞ্চলে সবচেয়ে বড় সামরিক সমাবেশ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন মাদুরোর সময় শেষের দিকে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভেনিজুয়েলায় স্থল হামলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পকে ভেনিজুয়েলার ভেতরে সামরিক অভিযানের বিকল্পগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে, যদিও তিনি এখনো সিদ্ধান্ত নেননি।
মন্তব্য করুন