সম্প্রতি চাঁদে চন্দ্রযান পাঠিয়ে ইতিহাস গড়েছে ভারত। এবার নতুনভাবে ইতিহাস গড়ার ঘোষণা দিয়ে যুক্তরাজ্য। আগামী বছরের মে মাসে আকাশে রকেট পাঠাবে যুক্তরাজ্য। এ রকেটের মূল জ্বালানি হবে কেরোসিন-পারঅক্সাইড।
প্রায় ৫০ বছর আগে মাহাকাশে প্রথম রকেট পাঠায় যুক্তরাজ্য। তবে নিজেদের ইতিহাস নিজেরাই আবার ভেঙে গড়তে চলেছে। নিয়েছে নতুন চ্যালেঞ্জ। এবার তারা কোরোসিনের জ্বালানি দিয়ে রকেট আকাশে পাঠাবে। বর্তমানে দেশটির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আগে অন্য দেশের উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ব্যবহার করলেও এবার তারা নিজেদের কেন্দ্র ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, স্কটল্যান্ডের স্কাইরোরা এ রকেট তৈরির কাজ করছে। শেটল্যান্ডের স্যাক্সাভর্দ থেকে আগামী বছর এটির উৎক্ষেপণ করা হবে। স্কাইরোরার রকেট প্রকল্প দলের সদস্য ইউয়ান ক্লার্ক জানান, ১৯৭১ সালে যুক্তরাজ্য ‘ব্ল্যাক অ্যারো’ পাঠায়। এটাই এযাবৎকালে প্রতিষ্ঠানটির সেরা সাফল্য। সেই সাফল্যের ৫০ বছর পর আমরা আবারও রকেট পাঠানোর চেষ্টা চলছে। স্কাইরোরার অফিসে ব্ল্যাক অ্যারো স্যাটেলাইটের অংশবিশেষ প্রবেশপথে সাজিয়ে রাখা হয়েছে নতুন করে অনুপ্রেরণা পাওয়ার জন্য।
স্কাইরোরা ছাড়াও অরেবক্স প্রাইম নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান রকেট পাঠানোর জন্য কাজ করছে। এ প্রতিষ্ঠানটি সাদাল্যান্ড স্পেসপোর্ট থেকে রকেট পাঠানোর জন্য পরিকল্পনা নিয়েছে। স্কাইরোরার এ রকেটের আকার মাত্র ২২ মিটার। এটির ইঞ্জিন থ্রিডি প্রিন্টারে প্রিন্ট করে বানানো হয়েছে। স্কাইরোরা ব্রিটিশ আইলস এলাকা থেকেই এসব রকেট আগামী বছরে পাঠানো শুরু করবে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জনশূন্য এলাকা থেকে উন্মুক্ত জলরাশির ওপর দিয়ে এ রকেট উৎক্ষেপণ করা হবে। এ রকেটে যুক্ত স্যাটেলাইটগুলো পৃথিবীর জলবায়ু ও মেরু গবেষণায় ব্যবহৃত হবে।
স্কাইরোরার রকেট প্রকল্প দলের সদস্য ইউয়ান ক্লার্কের মতে, ‘আমরা পরিবেশের ওপর চোখ রাখতে পারে এমন স্যাটেলাইট পাঠাব, যা যোগাযোগের জন্যও কাজে আসবে। প্রতিটি রকেটে ৩০০ কেজি পাঠানো যাবে, আর প্রতি কেজি পাঠাতে খরচ পড়বে ৩০ থেকে ৩৬ হাজার পাউন্ড। এসব রকেটে ১ হাজার কিলোমিটার পাঠাতে ৫০ হাজার লিটারের মতো জ্বালানি লাগে। প্রকৌশলীরা পরিকল্পনামাফিক চললে আগামী বছর থেকে প্রতি মাসে রকেট পাঠাতে পারবেন বলে জানিয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের এসব রকেট কেরোসিন-পারঅক্সাইডের তরল জ্বালানিতে চলবে। কেরোসিনের চেয়ে ভিন্ন কেরোসিন-পারঅক্সাইডের তরল জ্বালানি কম দূষণ তৈরি করে। এ ছাড়া এই জ্বালানি রকেটে সংরক্ষণ করা বেশ সহজ। যদিও প্রচলিত রকেটে অক্সিজেননির্ভর জ্বালানি ব্যবহার করা হয়।
মন্তব্য করুন