কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:০৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের হুমকি দিলেন নিউইয়র্কের মেয়রপ্রার্থী

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও নিউইর্ক শহরের মেয়রপ্রার্থী জোহরান মামদানি। ছবি : সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও নিউইর্ক শহরের মেয়রপ্রার্থী জোহরান মামদানি। ছবি : সংগৃহীত

গাজায় যুদ্ধবিধ্বস্ত শিশুদের আর্তনাদ যেন সাগর পেরিয়ে পৌঁছে গেছে নিউইয়র্কের আকাশে। সেই বেদনার প্রতিধ্বনি হয়ে শহরে জন্ম নিয়েছে এক নজিরবিহীন রাজনৈতিক আলোড়ন। এর কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন তরুণ প্রগতিশীল রাজনীতিক জোহরান মামদানি, যিনি মেয়রপ্রার্থী হয়ে বিশ্বজুড়ে দৃষ্টি কাড়ছেন তার সাহসী ঘোষণায়।

তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যদি নিউইয়র্কে পা রাখেন, তবে তাকে গ্রেপ্তারের আদেশ দেবেন তিনি। এমন স্পষ্ট ও কঠিন হুমকি মার্কিন রাজনীতিতে বিরল। কারণ, যেখানে অধিকাংশ রাজনীতিক কূটনীতির জটিল ভাষায় আটকে যান, সেখানে জোহরান দাঁড়িয়েছেন একেবারে আলাদা অবস্থানে।

নিউইয়র্কের রাজনীতি সবসময়ই প্রভাবশালী ইহুদি ভোটারদের উপস্থিতিতে সংবেদনশীল। তবু জোহরান নির্দ্বিধায় বলেছেন, শহরের আইনকে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে হবে। তার মতে, গাজার রক্তক্ষয়ী বাস্তবতায় চোখ বন্ধ রাখা মানে মানবতার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।

আইন বিশেষজ্ঞরা অবশ্য মনে করিয়ে দিয়েছেন— যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সদস্য নয়। ফলে আইসিসি যে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়েছে, তার ভিত্তিতে নিউইয়র্কে গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া চালানো প্রায় অসম্ভব। এমনকি ফেডারেল আইনের সঙ্গেও এ উদ্যোগ সাংঘর্ষিক হতে পারে। তবে ইতিহাসের উদাহরণ টেনে জোহরানের সমর্থকরা বলছেন, অসম্ভবই অনেক সময় পরিবর্তনের পথ দেখায়। যেমন ২০০৪ সালে সান ফ্রান্সিসকোর মেয়র গ্যাভিন নিউসম ফেডারেল আইন অগ্রাহ্য করে সমকামী দম্পতিদের বিবাহের অনুমতি দিয়েছিলেন, যা পরবর্তীতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে।

জোহরান শুধু নেতানিয়াহুই নন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নামও উচ্চারণ করেছেন। তার ভাষায়, নিউইয়র্ক কেবল সংস্কৃতি ও অর্থনীতির শহর নয়, এটি আন্তর্জাতিক আইনের জন্যও আশ্রয়স্থল হতে পারে। তবে প্রতিদ্বন্দ্বীরা এটিকে নিছক রাজনৈতিক প্রচারণা বলে আখ্যা দিচ্ছেন। নেতানিয়াহু নিজেও বিদ্রূপ করে বলেছেন, এ ধরনের হুমকি হাস্যকর। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার সতর্ক করে বলেছেন, ‘ভালো আচরণ করুন, না হলে বিপদে পড়বেন।’

তবে নিউইয়র্কের একাংশ নাগরিক ইতোমধ্যেই জোহরানের কণ্ঠে নিজেদের অনুভূতি খুঁজে পাচ্ছেন। জরিপে দেখা গেছে, গাজা নিয়ে তার স্পষ্ট অবস্থান সাধারণ ভোটারদের হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে। নিহতের সংখ্যা লাখের ঘর ছোঁয়ার সঙ্গে সঙ্গে ধ্বংসস্তূপে ঘুমিয়ে থাকা হাজারো স্বপ্ন যেন তার কণ্ঠে আওয়াজ পাচ্ছে।

শেষ পর্যন্ত হয়তো বিমানবন্দরে নেতানিয়াহুকে হাতকড়া পরানো হবে না। কিন্তু জোহরান মামদানি যে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন— ন্যায়বিচারের লড়াইয়ে শহরগুলো কি নীরব দর্শক হয়ে থাকবে, নাকি সাহসী কণ্ঠ হয়ে উঠবে?—এই প্রশ্নের উত্তর এখন সময়ের হাতেই।

সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এমবাপ্পের ম্যাজিকে দশজন নিয়েও জয়ের হাসি রিয়ালের

জাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি জিতুর প্রতিক্রিয়া

যোগ্য-নীতিবান নেতৃত্বকে নির্বাচিত করতে হবে : আজিজুর রহমান

শিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই

স্বৈরাচার পতনে রাজপথে থাকা গণমাধ্যমকর্মীরাও জুলাই যোদ্ধা : তারিকুল হাসান

ব্যারিস্টার ফুয়াদকে এক হাত নিলেন হামিম

সাংবাদিক আরিফিন তুষার রয়ে যাবেন স্মৃতির পাতায়

জাকের-শামীমে ভর করে লড়াকু সংগ্রহ বাংলাদেশের

বিদেশি ঘটনাকে মাগুরার বলে চালিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে : পুলিশ

নিউমার্কেট এলাকায় চাঁদাবাজির সময় আটক তিন

১০

রাকসুতে ২৯ হাজার ভোট, ম্যানুয়ালি গণনার দাবি ছাত্রদলসহ দুই প্যানেলের

১১

পূর্ণাঙ্গ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান আফাজ উদ্দিনের 

১২

জাকসুর ফলাফল ঘোষণায় কেন এত সময় লাগল?

১৩

হেরে যাওয়ার পর যা বললেন শিবিরের ভিপি প্রার্থী

১৪

পাঁচ বছরেই দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করা সম্ভব : শফিকুর রহমান

১৫

রাকসু নির্বাচনে ১৪ প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার

১৬

‘পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে সম্মিলিত আন্দোলন গড়তে হবে’

১৭

বিএনপির বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে : জিকে গউছ

১৮

দাগনভূঞায় সড়ক সংস্কার কাজে বাধা, গ্রেপ্তার ১

১৯

বিজয়ী জিতুকে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি হেরে যাওয়া শিবিরের ভিপি প্রার্থীর

২০
X