যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরুদ্ধে অভিশংসন তদন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করার পক্ষে ভোট দিয়েছে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ। স্থানীয় সময় বুধবার রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে ২২১-২১২ ভোটে পেয়ে এই তদন্ত অনুমোদিত হয়েছে। এর মানে হলো প্রতিনিধি পরিষদের সব রিপাবলিকান সদস্য অভিশংসন তদন্ত শুরুর পক্ষে ভোট দিয়েছেন এবং সব ডেমোক্রেটিক সদস্য বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। খবর রয়টার্সের।
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের অনুমোদনের পর একটি বড় প্রশ্ন সামনে আসছে। আর তা হলো যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টি প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবে কি না।
মূলত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার ৫৩ বছর বয়সী ছেলে হান্টার বাইডেনের বৈদেশিক ব্যবসা থেকে অন্যায়ভাবে কোনো সুবিধা নিয়েছেন কি না, তা তদন্ত করে দেখবে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ। তবে ডেমোক্র্যাট এই নেতার বিরুদ্ধ এখন পর্যন্ত কোনো অন্যায়ের প্রমাণ খুঁজে পায়নি রিপাবলিকানরা। অন্যদিকে বাইডেনের বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অ্যাখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে হোয়াইট হাউস।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ব্যবস্থায় ক্ষমতাসীন কোনো প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন বা ক্ষমতাচ্যুত করার প্রথম ধাপ হলো তার বিরুদ্ধে প্রতিনিধি পরিষদে আনুষ্ঠিকভাবে তদন্ত শুরুর অনুমোদন করানো। বাইডেনের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে এই কাজ সম্পন্ন করেছে রিপাবলিকানরা। কংগ্রেস কমিটির সামনে এখন সাক্ষীদের শুনানি ও জেরা করা হবে। এটি একটি প্রকাশ্য প্রক্রিয়া এবং মার্কিনিরা টিভির পর্দায় প্রতিদিনের শুনানি দেখে থাকেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে শুনানির পর অভিশংসনের প্রস্তাব পাস হতে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতাই যথেষ্ঠ। এর মানে হলো প্রস্তাবের পক্ষে মোট ২১৮টি ভোট পড়তে হবে।
তবে মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে বাইডেনকে দোষী সাব্যস্ত করা এবং তাকে পদ থেকে সরিয়ে দিতে হলে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন হবে। অর্থাৎ অন্তত ৬৭ জন সিনেট সদস্যের ভোট লাগবে। তবে এই ধরনের ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কেননা বর্তমানে সিনেটের নিয়ন্ত্রণ (৫১-৪৯) ডেমোক্র্যাটদের হাতে রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রতিনিধি পরিষদে এখন পর্যন্ত মোট তিনজন প্রেসিডেন্ট অভিশংসিত হয়েছেন। অ্যান্ড্রু জনসন (১৮৬৮ সাল) ও বিল ক্লিনটন (১৯৯৮ সাল) ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদের মধ্যে শুধু ট্রাম্প দুবার অভিশংসিত হয়েছেন (২০১৯ ও ২০২১ সাল)। তবে তাদের তিনজনের কেউ সিনেটে দোষী সাব্যস্ত হননি। ফলে কেউকে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়নি।
মন্তব্য করুন