আতাউর রহমান
প্রকাশ : ১৮ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
আপডেট : ১৮ জুন ২০২৩, ০৮:৪০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

২৭ বছরে ৩৫ সাংবাদিক হত্যা, মেলেনি বিচার

সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম। পুরোনো ছবি
সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম। পুরোনো ছবি

রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার-মেহেরুন রুনি। হত্যাকাণ্ডের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী; কিন্তু এক যুগের বেশি সময় পার হলেও হত্যারহস্য উদ্ঘাটন হয়নি। বিচার পায়নি পরিবার।

শুধু সাগর-রুনি নন, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০২৩—এই ২৭ বছরে দেশে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন অন্তত ৩৫ সাংবাদিক। হত্যাকাণ্ডের এই তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে জামালপুরের সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিমের নাম। গত বুধবার রাতে জামালপুরের বকশীগঞ্জ বাজারের পাটহাটি এলাকায় দুর্বৃত্তরা এই সাংবাদিককে নির্মমভাবে হত্যা করে।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি ও সিনিয়র সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল গতকাল ঢাকায় এক বিক্ষোভ সমাবেশে তথ্য দেন, সাংবাদিক হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের ঘটনাগুলোর মধ্যে মাত্র তিনটি হত্যাকাণ্ডের বিচার নিষ্পত্তি হয়েছে। এর মধ্যে খুলনায় সাংবাদিক হারুন অর রশিদ হত্যাকাণ্ডে ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছে পুলিশ। মানিক সাহা হত্যাকাণ্ডের রায় হলেও তার পরিবার ও সাংবাদিক সমাজ সেই রায় মানেনি। ফরিদপুরের সাংবাদিক গৌতম দাস হত্যাকাণ্ডে নিম্ন আদালতে রায় হলেও এখনো চূড়ান্ত রায় হয়নি। এই ফাঁকে সব আসামি কারাগার থেকে বেরিয়ে গেছে।

ঢাকায় সাংবাদিক নেতারা বলছেন, দেশে সাংবাদিকরা হত্যা বা হামলার শিকার হলেও বিচার হয় না। এ নিয়ে তারা বিভিন্ন সময়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন।

সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের মামলাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চেয়েছেন। রাস্তায় আন্দোলন করেছেন; কিন্তু সুরাহা না হওয়ায় তারা হতাশ হয়েছেন। এরই মধ্যে ফের সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটল।

সাংবাদিকরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেও কেন বিচার হয় না—জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক কালবেলাকে বলেন, আমরা সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের মামলাগুলো যাচাই করেছি। যেসব মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে, সেগুলো দুর্বল। পুলিশ সঠিক তদন্ত করতে পারেনি বা করেনি। বিচার না পাওয়ার এটি বড় কারণ। আবার অনেক মামলা আছে—বছরের পর বছর ধরে তদন্ত চলায় হত্যাকাণ্ডের আলামতও নষ্ট হয়ে যায়।

কোনোটার চার্জশিট হলেও আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় আদালতে সাক্ষী পাওয়া যায় না। এসব কারণে তারা বিচার পাচ্ছেন না। সাংবাদিকদের শীর্ষ সংগঠনের এই নেতা বলেন, আমরা বিষয়গুলো নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে কথা বলেছি। সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের মামলাগুলো সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত এবং দ্রুত বিচার কার্যক্রম শেষ করার প্রতিশ্রুতি পেয়েছি; কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এটি নিয়ে সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারা হতাশ।

দুই বছর আগে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার বৈশ্বিক সংগঠন ‘কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টসের (সিপিজে) গ্লোবাল ইমপিউনিটি ইনডেক্সে বলা হয়, বিশ্বে সাংবাদিক হত্যার বিচার না হওয়া দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১তম। সংস্থাটির সর্বশেষ প্রতিবেদন বলছে, ১৯৯২ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত দেশে ৩৪ সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী হত্যার শিকার হয়েছেন। যদিও ওই তালিকাটিতে হত্যাকাণ্ডের শিকার অন্তত ৭ মুক্তমনা লেখক ও ব্লগারকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

ঢাকায় সাংবাদিক সংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বাধীনতার পর দেশে কতজন সাংবাদিক খুন হয়েছেন, এসব মামলার সর্বশেষ অবস্থা কী—আনুষ্ঠানিকভাবে সে তথ্য লিপিবদ্ধ করে রাখা হয় না। তবে অনেক সাংবাদিক-গবেষক ব্যক্তি উদ্যোগে এটি করে থাকেন।

সাংবাদিক মানিক সাহার ১৮তম হত্যাকাণ্ডের দিন গত বছর ১৫ জানুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভার মূল প্রবন্ধে বলা হয়, ‘১৯৯৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত খুন হওয়া সাংবাদিকের সংখ্যা ৩৫। এর মধ্যে মানিক সাহা হত্যা মামলাসহ কয়েকটি মামলায় বিচার বলতে কিছু একটা হলেও বিচারের রায় নিয়ে সংশ্লিষ্টরা উষ্মা প্রকাশ করেছেন। পুনঃতদন্তের দাবি জানিয়েছেন। সাংবাদিক হত্যার অন্য মামলাগুলোর কোনোটির বিচার শুরু হয়নি। কোনোটির চার্জশিট দেওয়া হয়নি। আবার কোনোটি নথিপত্রের অভাবে হারিয়ে গেছে। বেশিরভাগ মামলায় নথিপত্রের অভাবে অভিযুক্তরা দায়মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে।’ সাংবাদিক পলাশ আহসান ওই প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার ঘটনাগুলোর বেশিরভাগের বিচার হয় না বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিক্ষা, গবেষণা ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো। গত বছরের নভেম্বরে সংস্থাটির এক প্রতিবেদন বলছে, সাংবাদিক হত্যার ৮৬ শতাংশ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা রেহাই পেয়ে যায়। সাংবাদিক হত্যার অভিযোগ থেকে রেহাই পাওয়ার হার বেশ উচ্চ উল্লেখ করে তা নিয়ে উদ্বেগও জানায় ইউনেসকো।

জানা যায়, ১৯৯৬ সালের ৮ জুন সাতক্ষীরার পত্রদূত সম্পাদক শ ম আলাউদ্দীন খুন হন। এর দুই বছর পর ৩০ আগস্ট যশোরের দৈনিক রানার সম্পাদক সাইফুল আলম মুকুল খুন হন। ২০০০ সালের ১৬ জুলাই দৈনিক জনকণ্ঠের যশোর প্রতিনিধি শামছুর রহমান কেবলকে নিজ কার্যালয়ে সন্ত্রাসীরা হত্যা করে। ২০০২ সালের ২ মার্চ খুন করা হয় খুলনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক পূর্বাঞ্চলের সিনিয়র রিপোর্টার হারুন অর রশিদকে। এর চার মাস পর খুন হন খুলনার অনির্বাণ পত্রিকার সাংবাদিক শুকুর হোসেন এবং আগস্টে শ্রীমঙ্গলে খুন হন দৈনিক পূবালী বার্তার সাংবাদিক সৈয়দ ফারুক আহমেদ। ২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারি খুলনা প্রেস ক্লাবের সামনে সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় নিহত হন দৈনিক সংবাদের খুলনা ব্যুরো প্রধান এবং প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মানিক সাহা। একই বছরের ২ মার্চ কেরানীগঞ্জে দ্য নিউএজের সাংবাদিক আব্দুল লতিফ পাপ্পু নিহত হন। ওই বছরের ২৭ জুন নিজের অফিসে নিহত হন খুলনার দৈনিক জন্মভূমির সম্পাদক হুমায়ূন কবির বালু। ২২ আগস্ট চট্টগ্রামে খুন হন আজকের কাগজের সাংবাদিক কামাল হোসেন। এর দুই মাসের মাথায় অক্টোবরে বগুড়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক দুর্জয় বাংলার নির্বাহী সম্পাদক দীপংকর চক্রবর্তী নিজ বাসায় নিহত হন। ওই বছরই খুন হন দৈনিক সংগ্রামের খুলনা প্রতিনিধি বেলাল হোসেন। ২০০৫-এর ২৯ মে কুমিল্লার দৈনিক মুক্তকণ্ঠের সাংবাদিক গোলাম মাহমুদ, ওই বছরের ৫ নভেম্বর দৈনিক সমকালের ফরিদপুর ব্যুরো চিফ গৌতম দাসকে হত্যা করা হয়।

এ ছাড়া ২০১১ সালের ২৮ জানুয়ারি পল্টনের নিজ বাসায় খুন হন দৈনিক জনতার সহসম্পাদক ফরহাদ খাঁ ও তার স্ত্রী রহিমা খাতুন। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় এনটিভির ভিডিও এডিটর আতিকুল ইসলাম আতিক, জুলাই মাসে ঢাকার পাক্ষিক মুক্তমনের স্টাফ রিপোর্টার নুরুল ইসলাম ওরফে রানা, আগস্টে গাজীপুরে সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক সময়ের নির্বাহী সম্পাদক এমএম আহসান হাবিব বারি এবং ডিসেম্বরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সংবাদদাতা ও রূপগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি আবুল হাসান আসিফ খুন হন। ২০১০ সালের ৯ মে গুপ্তহত্যার শিকার হন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলার সিনিয়র ক্যামেরাম্যান শফিকুল ইসলাম টুটুল। একই বছরের ২৮ এপ্রিল সাপ্তাহিক ২০০০-এর সিলেট প্রতিনিধি ফতেহ ওসমানী এবং ২৩ ডিসেম্বর প্রকাশ্যে খুন হন বরিশালের মুলাদী প্রেস ক্লাবের সভাপতি মনির হোসেন রাঢ়ী।

২০১১ সালের ৭ ডিসেম্বর গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে গলা কেটে হত্যা করা হয় দৈনিক ভোরের ডাকের গোবিন্দগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি ফরিদুল ইসলাম রঞ্জুকে। ওই বছরের এপ্রিলে চট্টগ্রামের পোর্টকলোনিতে দৈনিক আজকের প্রত্যাশার সাংবাদিক মাহবুব টুটুলকে হত্যা করা হয়। একই বছরের এপ্রিলে উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর সড়কে ১০ নম্বর বাসা থেকে সাপ্তাহিক বজ্রকণ্ঠের সাংবাদিক আলতাফ হোসেনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি নিজ বাসায় খুন হন মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনি। ওই ঘটনার পর সাংবাদিক সমাজ আন্দোলন চালিয়ে গেলেও এক যুগের বেশি সময় ধরেও মামলার তদন্ত শেষ করা হয়নি। ওই বছরের ১৫ জুন যশোরে খুন হন সাংবাদিক জামাল উদ্দিন। ২০১৪ সালের ২১ মে চুয়াডাঙ্গায় খুন হন দৈনিক মাথাভাঙা পত্রিকার সাংবাদিক সদরুল আলম নিপুল এবং ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে রংপুরে খুন হন যুগের আলো পত্রিকার সাংবাদিক মশিউর রহমান উৎস, ২০১৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে খুন করা হয় দৈনিক সমকালের প্রতিনিধি আবদুল হাকিম শিমুলকে। ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জে খুন হন দৈনিক বিজয় পত্রিকার সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন। পরের বছর ১৯ ফেব্রুয়ারি নোয়াখালীতে খুন হন বাংলাদেশ সমাচারের সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন মোজাক্কির।

২০২২ সালের এপ্রিলে দৈনিক কুমিল্লার ডাকের সাংবাদিক মহিউদ্দিন সরকার নাইম খুন হন। একই বছরের ৩ জুলাই নিখোঁজের পর লাশ মেলে কুষ্টিয়ার সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেলের।

সিরাজগঞ্জে নিহত সাংবাদিক আবদুল হাকিম শিমুলের স্ত্রী নুরুন্নাহার খাতুন গতকাল কালবেলাকে বলেন, তার স্বামীর হত্যাকাণ্ডে জড়িত তৎকালীন পৌর মেয়র হালিমুল হক মিরুসহ তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা হলেও সবাই কারাগার থেকে বেরিয়ে গেছে। তিনি ৬ বছর ধরে অপেক্ষা করেও এখন পর্যন্ত স্বামী হত্যার বিচার পেলেন না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সুদানে কিন্ডারগার্টেনসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা, ৪৬ শিশুসহ নিহত ১১৪

আমনের ভালো ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

ট্রাকের ধাক্কায় তরুণের হাত বিচ্ছিন্ন

জুলাই হত্যা মামলায় সালমান-আনিসুল ট্রাইব্যুনালে

একনজরে দেখে নিন বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার ম্যাচসূচি

জুলাই একটি আদর্শিক ভিত্তির ওপর রচিত হয়েছে : জাহিদুল ইসলাম

বুসকেটস ও আলবার বিদায়ী ম্যাচে এমএলএসের রাজা মেসি

৭ ডিসেম্বর : ইতিহাসের এই দিনে যা ঘটেছিল

বিশ্বকাপ ফুটবলের পূর্ণাঙ্গ সূচি ঘোষণা, দেখে নিন কবে কার ম্যাচ

জুলাইয়ের ১১৪ শহীদের মরদেহ উত্তোলন শুরু আজ

১০

জামায়াত নেতাকে কোপাল নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী

১১

টিভিতে আজকের যত খেলা

১২

কেমন থাকবে আজকের ঢাকার আবহাওয়া

১৩

আলাস্কায় ৭ মাত্রার ভূমিকম্প, কাঁপল কানাডাও

১৪

শীতের দাপটে কাঁপছে তেঁতুলিয়া

১৫

মধ্যপ্রাচ্য নীতি পাল্টে দিলেন ট্রাম্প

১৬

ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, যেভাবে গ্রেপ্তার হলো খুনি

১৭

৫৬০০ নতুন সেনা মোতায়েন করল ভেনেজুয়েলা

১৮

রোববার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

১৯

গোয়ায় নাইটক্লাবে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, ২৩ জনের মৃত্যু

২০
X