এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের (এটিসি) অনুমতি ছাড়াই ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়েতে ঢুকে পড়েছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মদিনাগামী একটি উড়োজাহাজ। ততক্ষণে অনুমতি নিয়েই নভোএয়ারের একটি উড়োজাহাজ রানওয়েতে অবতরণ করছিল। এতে ভয়াবহ সংঘর্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও এটিসির দ্রুত পদক্ষেপে শেষ পর্যন্ত রক্ষা পেয়েছেন দুই ফ্লাইটের অন্তত সাড়ে চারশ যাত্রী। গত মঙ্গলবার ঘটে এ ঘটনা। বিমানবন্দর সূত্রে মিলেছে এই তথ্য।
শুধু তাই নয়, মদিনা বিমানবন্দরে নেমেও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজটি ভুল জায়গায় পার্কিং করেন দুই পাইলট। একাধিক ভুলের কারণে এরই মধ্যে দুই পাইলটকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে কমিটি করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
বিষয়টি জানতে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ছুটিতে বিদেশ রয়েছেন বলে জানান। বিষয়টি নিয়ে বিমানের জনসংযোগ বিভাগে যোগাযোগ করা হলেও সেখান থেকে ওই বিষয়ে কিছু বলতে অপারগতার কথা জানানো হয়।
শাহজালাল বিমানবন্দর সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার বিমানবন্দরের রানওয়েতে নভোএয়ারের একটি ফ্লাইট অবতরণ করতে চাইলে বিমানবন্দরের এটিসি সেটিকে অনুমতি দেয়। নভোএয়ারের ফ্লাইটের অবতরণের ঠিক আগ মুহূর্তে এটিসির অনুমতি ছাড়াই বিমানের ঢাকা থেকে মদিনাগামী একটি ফ্লাইট রানওয়েতে ঢুকে পড়ে এবং উড্ডয়নেরও প্রস্তুতি নেয়। তখন পুরো বিমানবন্দরেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে শেষ পর্যন্ত এটিসির দ্রুত পদক্ষেপে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা মেলে।
এটিসির একজন কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, পরিস্থিতির ভয়াবহতা আন্দাজ করে আগের উড্ডয়ন ক্লিয়ারেন্স নির্দেশ বাতিল করে নভোএয়ারের উড়োজাহাজটিকে আকাশে চক্কর দেওয়ার (গো অ্যারাউন্ড) নির্দেশ দেওয়া হয়। এতে বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, মদিনাগামী বিমানের বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর মডেলের উড়োজাহাজে ৪১৯ যাত্রী ছিলেন। ফ্লাইটের অপারেশনাল কমান্ডে ছিলেন ক্যাপ্টেন শাহদাত হোসেন এবং ফার্স্ট অফিসার ছিলেন ক্যাপ্টেন মো. জামাল।
এদিকে ঘটনার পর মঙ্গলবার রাতেই বিমানের সেফটি বিভাগ থেকে বিষয়টি অবগত করে শিডিউলিং বিভাগে চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে বিমানের ফ্লাইট সেফটি বিভাগের প্রধান ক্যাপ্টেন এনামুল হক তালুকদার স্বাক্ষর করেন। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, একই দিন মদিনা বিমানবন্দরে অবতরণের পর ভুল জায়গায় বিমান পার্কিং করেন বিমানের ওই দুই পাইলট। একাধিক ভুলের কারণে দুই পাইলটকে ফ্লাইট সিডিউলিংয়ে না রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে বারবার চেষ্টা করেও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (পাবলিক রিলেসন্স) তাহেরা খন্দকারকে ফোনে পাওয়া যায়নি। পরে জনসংযোগ বিভাগের ব্যবস্থাপক মো. নজরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি নিয়ে তারা অবগত নন বলে এড়িয়ে যান।
মন্তব্য করুন