কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম
আপডেট : ২২ জুলাই ২০২৩, ০৭:৩৯ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

৫০ বেসরকারি হাসপাতাল দেয় ডেঙ্গুর তথ্য!

দেশে প্রতিদিনই ডেঙ্গু আক্রান্ত-মৃত্যু হচ্ছে। হাসপাতালগুলো রোগীতে ভর্তি। বেডে বেডে মশারি টানানো। ছবিটি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থেকে তোলা। নাসির উদ্দিন
দেশে প্রতিদিনই ডেঙ্গু আক্রান্ত-মৃত্যু হচ্ছে। হাসপাতালগুলো রোগীতে ভর্তি। বেডে বেডে মশারি টানানো। ছবিটি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থেকে তোলা। নাসির উদ্দিন

ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়লেও সঠিক পরিসংখ্যান নেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে। ঢাকা জেলায় সরকারি নিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল ৫৪৬টি। অথচ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে ডেঙ্গু রোগী ভর্তির তথ্য দেয় মাত্র ৫০টি বেসরকারি হাসপাতাল। এতে প্রকৃত রোগীর সংখ্যা আড়ালে থেকে যাচ্ছে। গতকাল শুক্রবার ছুটির অজুহাতে সরকারি-বেসরকারি ৩৫টি হাসপাতাল ও ক্লিনিক ডেঙ্গু আক্রান্ত-মৃতের তথ্য পাঠায়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে। ফলে এক দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃতের প্রকৃত তথ্য পাওয়া যায়নি। অথচ এসব প্রতিষ্ঠানেই অধিকাংশ রোগী ভর্তি ও মারা যায়। গতকাল পাঠানো তথ্যমতে, শুক্রবার সারা দেশে ৮৯৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। একই সময়ে আরও একজনের মৃত্যুর তথ্য রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ভর্তি আছে ৪০৩ জন এবং ঢাকার বাইরে আরও ৪৯৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। গতকাল শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ ডা. মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ডেঙ্গুবিষয়ক নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, রাজধানীর ৭০টি সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতাল ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ও মৃতের তথ্য পাঠায়। এর মধ্যে গতকাল তথ্য পাঠায়নি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সাভার), বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বারডেম হাসপাতাল, কল্যাণপুর ইবনে সিনা হাসপাতাল, স্কয়ার হাসপাতাল, কমফোর্ট নার্সিং, ল্যাবএইড হাসপাতাল, মুগদা ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল, ইউনাইটেড হাসপাতাল লিমিটেড, শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আদ্-দ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিআরবি হসপিটাল লিমিটেড, বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সালাউদ্দিন হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ ফর ওমেন অ্যান্ড হসপিটাল, ডা. এম আর খান শিশু হাসপাতাল, ডাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আইচি হসপিটাল প্রাইভেট লিমিটেড, মনোয়ারা হসপিটাল প্রাইভেট লিমিটেড, জয়নুল হক শিকদার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ফারাবি জেনারেল হাসপাতাল, এক্সিম ব্যাংক হাসপাতাল, আল মানার হাসপাতাল, ঢাকা হেলথ কেয়ার হাসপাতাল, মেট্রোপলিটন মেডিকেল সেন্টার হাসপাতাল, বিআইএইচএস জেনারেল হাসপাতাল ও ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৬ হাজার ৭৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৭০টি হাসপাতালে তিন হাজার ৫৬০ জন এবং ঢাকার বাইরে অন্যান্য বিভাগে দুই হাজার ৫১৬ জন। দেশে মোট মৃত্যু ১৫৬ জনের মধ্যে ঢাকায় ১২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ঢাকার বাইরে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকায় মৃতদের মধ্যে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সর্বোচ্চ ৩৬ জন মারা গেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩০ জন, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে ১৪ জন। বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে পাঁচজন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চারজন। কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে দুজন, ডিএনসিসি কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে দুজন। এ ছাড়া শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ঢাকা মহানগর শিশু হাসপাতালে ও সম্মিলত সামরিক হাসপাতালে তিনজন মারা গেছে। বেসরকারি হাসপাতালের হিসাবে সবচেয়ে বেশি মারা গেছে পুরান ঢাকার আজগর আলী হাসপাতাল ও স্কয়ার হাসপাতালে ৫ জন করে মোট ১০ জন। বারডেম হাসপাতাল, কল্যাণপুর ইবনে সিনা হাসপাতাল ও ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্র্রাল হাসপাতালে তিনজন করে মোট ৯ জন। পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজন। এ ছাড়া পান্থপথ গ্রিন লাইফ হাসপাতাল, গুলশান ইউনাইডেট হাসপাতাল, পান্থপথ শমরিতা হাসপাতাল, বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতাল এবং আইচি হসপিটালে একজন করে আরও পাঁচজন মারা গেছে। রাজধানীর বাইরে মারা যাওয়া ৩৪ জনের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে ২০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে চারজন, খুলনা বিভাগে তিনজন, বরিশালে তিনজন, রাজশাহী বিভাগে দুজন, রংপুর ও ঢাকা বিভাগে দুজন মারা গেছে। ডেঙ্গু মৃত্যুর তথ্য মাস হিসেবে বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি বছরের প্রথম মৃত্যু হয়েছে জানুয়ারি মাসে। তখন ছয়জনের মৃত্যু হয়। ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, এপ্রিলে দুজন, মে মাসে দুজন, জুনে ৩৪ জন এবং জুলাইয়ের গত ২১ দিনে ১০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত সেখানে ২৮ হাজার ৪৪৩ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। শুধু ঢাকা মহানগরে এ পর্যন্ত ১৭ হাজার ৬৪৬ জন, ঢাকার বাইরে ১০ হাজার ৭৯৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। গতকাল মৃত্যু হওয়া একজনকে নিয়ে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৫৬ জনের। মাস হিসেবে আক্রান্ত ও মৃত্যুর তথ্যে দেখা যায়, জানুয়ারিতে আক্রান্ত হয়েছে ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬, মার্চে ১১১, এপ্রিলে ১৪৩, মে মাসে ১০৩৬, জুনে ৫৯৫৬ ও জুলাইয়ের গত ২০ দিনে ১৯ হাজার ৫৬৯ জন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নতুন ধর্ম সচিব কামাল উদ্দিন

খুলনায় শিশু হত্যায় জড়িত ফয়সালের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

শিশু মিমের চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন শিমুল বিশ্বাস

পুয়ের্তো রিকো ম্যাচের আগে দুঃসংবাদ পেল আর্জেন্টিনা

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ ৫ দাবিতে ঢাকার ডিসিকে জামায়াতসহ ৭ দলের স্মারকলিপি

ট্রুডোর সঙ্গে প্রমোদতরীতে ঘনিষ্ঠ কেটি পেরি

রাবিতে ফারুক হত্যা মামলার সব আসামি বেকসুর খালাস

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত বাবাকে বাঁচাতে চান হাবিপ্রবির সালমা

রাতের অন্ধকারে ভোট চাই না : সিইসি

খাওয়ার পর বসে থাকার অভ্যাস ধূমপানের মতোই বিপজ্জনক

১০

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে লাইভ চলাকালে ফেসবুক পেজে সাইবার হামলা

১১

পাকিস্তানের ৫৮ সেনা নিহত, দাবি আফগানিস্তানের

১২

‘পরোয়ানা জারি হওয়া সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের ক্ষমতা রয়েছে ট্রাইব্যুনালের’

১৩

দু-তিন দিন ধরে ফ্ল্যাট বন্ধ, পুলিশ এসে উদ্ধার করল পাঁচটি মৃতদেহ

১৪

‘বৈষম্য আর আধিপত্যবাদের আগ্রাসন থেকে সেফ এক্সিট দরকার’

১৫

২০২৭ বিশ্বকাপ সরাসরি খেলতে বাংলাদেশের সামনে যে সমীকরণ

১৬

আপনার হোয়াটসঅ্যাপ অন্য কেউ ব্যবহার করছে না তো!

১৭

আন্দোলনরত শিক্ষকদের কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

১৮

বাড়িভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে কর্মসূচি দিলেন শিক্ষকরা

১৯

পিআর নিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে নির্বাচন বিলম্বের চেষ্টা চলছে : মির্জা ফখরুল 

২০
X