আব্দুর রহমান
প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ১৩ জুন ২০২৫, ১০:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

চুল-নখ কাটার পর কী করবেন

চুল-নখ কাটার পর কী করবেন

আল্লাহ মানুষকে সম্মানিত করে সৃষ্টি করেছেন। মানুষের শরীরের প্রতিটি অংশই সম্মান পাওয়ার যোগ্য। চুল, দাড়ি, নখ, রক্ত, পশম ইত্যাদি বিষয় যথাযথ মর্যাদা বজায় রেখে ফেলার নির্দেশ দেয় ইসলাম। শরীরের এসব অংশের সঙ্গে এমন ব্যবহার করা যাবে না, যা তাদের সম্মানহানি করে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর আমি মানব সন্তানকে সম্মানিত করেছি...’ (সুরা বনি ইসরাইল: ৭০)। নখ ও চুল কাটার পর তা দাফন করে ফেলা সুন্নত। মহানবী (সা.) তার নখ, চুল ইত্যাদি কাটলে তা দাফন করে ফেলতেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি হিজামা করালেও তার রক্তগুলো দাফন করে ফেলার হুকুম দিতেন।

ইসলামের প্রতিটি বিধি ও নীতিতে মানুষের কল্যাণ নিহিত। তাই মানুষের কল্যাণ-অকল্যাণের ছোট ছোট বিষয় ইসলাম অনেক সুন্দর করে প্রকাশ করেছে। এর একটি ক্ষুদ্র দৃষ্টান্ত দেখতে পাই ভারতের প্রখ্যাত আলেম মুফতি খালিদ সাইফুল্লাহ রহমানি রচিত ‘হালাল হারাম’ গ্রন্থে। ফতোয়ায়ে আলমগিরির সূত্রে তিনি বলেন, চারটি জিনিস মাটির নিচে দাফন করে ফেলা উচিত। নখ, শরীরের পশম, ঋতুস্রাবের কাপড় ও রক্ত; বিশেষ করে এগুলো কোনো নোংরা-ময়লা স্থানে ফেলা মাকরুহ। আধুনিক বিজ্ঞানও এর ক্ষতিকর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছে। সাধারণত এগুলো গুরুত্বহীনভাবে আমরা যত্রতত্র ফেলে দিই, যা মোটেই উচিত নয়। তাই কোনো ধরনের সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা না থাকলে এগুলো আমাদের মাটিতে পুঁতে ফেলা কর্তব্য। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ৫/৩৫৭)

মানুষের চুল, নখ, রক্ত, অবাঞ্ছিত লোম ইত্যাদিও তাদের অঙ্গ। এগুলো যত্রতত্র ফেলে দেওয়া উচিত নয়। হজরত মিল বিনতে মিশরাহ আল আশআরি থেকে বর্ণিত, তিনি তার পিতা মিশরাহকে [যিনি রাসুল (সা.)-এর সাহাবি ছিলেন] দেখেছেন, তিনি নখ কাটার পর তা দাফন করে ফেলতেন। তিনি বলতেন, তিনি রাসুল (সা.)-কে এমন করতে দেখেছেন। (আত তারিখুল কুবরা, ইমাম বোখারি: ৮/৪৫)। ইমাম আহমদ (রহ.)-কে এক ব্যক্তি কর্তিত চুল ও নখের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘এগুলো কি দাফন করব, নাকি ফেলে দেব?’ তিনি বলেন, ‘দাফন করে ফেলো।’ লোকটি বলল, ‘আপনি এ ব্যাপারে কিছু পেয়েছেন?’ তিনি বলেন, ‘ইবনে ওমর (রা.) এগুলো দাফন করে ফেলতেন।’ (আল মুগনি, ইবনে কুদামা: ১/১১০)

তা ছাড়া এসব জিনিস দাফন না করলে এগুলোর অপব্যবহারও হতে পারে। কিংবা এগুলোর মাধ্যমে রোগজীবাণুও ছড়াতে পারে। যেমন—কোনো ব্যক্তি যদি তার কেটে ফেলা চুল সঠিকভাবে দাফন না করে, তাহলে তা বাতাসে উড়ে খাবারে বা পানিতে মিশে যেতে পারে। ফলে তার সঙ্গে লেগে থাকা জীবাণু পেটে গিয়ে মানুষ অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। অনেকে আবার কেটে রাখা চুল বিক্রি করে দেন, যা শরিয়তে নিষিদ্ধ। কারণ মানব অঙ্গ বিক্রি করা শরিয়তে জায়েজ নেই। সাধারণত এই চুলগুলো বিদেশে বিক্রি হয়ে যায়। এগুলো দিয়ে সাধারণত পরচুলা, এক্সটেনশনে পরিণত করা হয়। উন্নত বিশ্বে এসবের অনেক দাম। মহান আল্লাহ সবাইকে এসব বাড়াবাড়ি পরিত্যাগ করার তওফিক দিন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কক্সবাজার সৈকতের অবৈধ দোকান উচ্ছেদ ও লাইসেন্স বাতিলের উদ্যোগ

জবি ও বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ট্রাম্পের সাক্ষাতের জল্পনা

যমুনা-পূবালী ব্যাংকের ১৩০০ কোটি টাকার বন্ড অনুমোদন

কালবেলায় সংবাদ প্রকাশের পর খুমেকে দুদকের অভিযান

কিংবদন্তি ক্রিকেট আম্পায়ার ডিকি বার্ড আর নেই

খেলনা শিল্পের বিশাল সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না : ডিসিসিআই সভাপতি

হাসপাতালের সিঁড়ি থেকে পড়ে রোগীর মৃত্যু

২২ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২৫ হাজার ৫৫৯ কোটি টাকা

আবারও পেছাচ্ছে বিসিবি নির্বাচন

১০

মহিলা লীগের নেত্রী লিমাসহ ১০ জন কারাগারে 

১১

প্রতিদিন বই পড়ার স্বাস্থ্যকর ৬ উপকারিতা জানলে চমকে যাবেন

১২

প্রকাশ্যে রাস্তায় নিজের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন, রিকশাচালকের মৃত্যু

১৩

খুলনায় এক বছরে নদী থেকে অর্ধশতাধিক মরদেহ উদ্ধার

১৪

নিউইয়র্কে বিমানবন্দরের ঘটনা নিয়ে মির্জা ফখরুলের প্রতিক্রিয়া

১৫

এসএসসির প্রশ্নকাঠামো ও নম্বর বিভাজনে পরিবর্তন 

১৬

ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৬৬৪

১৭

দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার ঘোষণা বাকৃবি প্রশাসনের

১৮

খাটে মায়ের মরদেহ, ফ্লোরে পড়ে ছিল নিস্তেজ ২ সন্তান

১৯

ফের পেছাল বুয়েটের ফারদিন হত্যা মামলার অধিকতর তদন্ত

২০
X